ছবির মতোই সুন্দর ছিল আমার গ্রামটা...

বর্ষা মৌসুমে নৌকা ছাড়া চলাচলের কোন উপায় থাকতোনা। যেন মহসড়কের পাশে বিচ্ছিন্ন ছোটএকটা দ্বীপ।

সমস্যা যত বড়ই হোক, আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে

আমরা অবশ্যই পারব৷ সমস্যা যত বড়ই হোক না কেন, আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে, নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে অনুপ্রেরণা জোগায়৷ কিন্তু সমস্যাকে নিজের চোখে না দেখলে শুধু আশা দিয়ে সমস্যা সমাধান করা যায় না৷

ঘুরে আসুন নারায়ণগঞ্জের সব দর্শনীয় স্থানে

অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর আমাদের বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি জেলায়ই রয়েছে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। যা আমাদের দেশকে করেছে আরো সমৃদ্ধ। শত বছর ধরে লাখো পর্যটককে করেছে আকৃষ্ট।

মানবসেবাই সর্বোত্তম ধর্ম: ফাদার তেরেসা

অসহায়, দুস্থ মানুষের সহায়তাই তার ধ্যান-জ্ঞান।সহিংসতার বিপরীতে তিনি অসহায়ের ত্রানকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন।তিনি পাকিস্তানের আবদুল সাত্তার ইদি।অসম্ভব মানবসেবার কারনে ৮৪ বছর বয়সী এই ব্যক্তি তার দেশে ফাদার তেরেসা নামেই বেশি পরিচিত।

‘মানসিক প্রশান্তির জন্য সাইকেল’

যাত্রা পথে পরিবহন নিয়ে দুশ্চিন্তা আর ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে বিকল্প হলো একটা বাই সাইকেল। তাছাড়া ইদানিং স্বাস্থ্যটার দিকেও মনে হচ্ছে একটু যত্ন নেয়া দরকার।

বুধবার, ২৫ জুন, ২০১৪

অপার রহস্যে ঘেরা নাটোরের বনলতা সেন

বাংলা সাহিত্যে আলোচিত সাহিত্যকর্মের মধ্যে জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’ কবিতাটি বিশেষভাবে পরিচিত। বহু সাহিত্য প্রেমির হৃদয় ছোঁয়া এই কবিতাটি জীবনানন্দ দাশের সাহিত্যকর্মকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু জীবনানন্দ দাশ এই কবিতায় যে রহস্য তৈরি করেছেন সেই রহস্য এখনো ধোয়াশা। কেননা প্রতিটি কবিই তার প্রতিটি সৃষ্টিকে কাউকে না কাউকে উদ্দেশ্য করে লিখেন। এই কবিতায় কবি কোন বনলতা সেনের কথা বলেছেন? বনলতা সেন নারী নাকি পুরুষ? এসকল প্রশ্নই মানুষের মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।

বনলতা সেন নারী নাকি পুরুষ?

এই প্রশ্নটি বেশিরভাগ মানুষের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। কবি যাকে উদ্দেশ্য করে কবিতাটি লিখেছেন সে কি নারী নাকি পুরুষ। কবিতায় কবি লিখেছেন – “অন্ধকার বিদিশার নিশার মত চুল” ও “শ্রাবস্তীর কারুকার্যের মত মুখ” এবং “পাখীর নীড়ের মত চোখ”। বিদিশার দিশার মত চুল নারী বা পুরুষ যে কারো থাকতে পারে। এখানে যদি দীঘল কেশ এর কথা বলা হতো তাহলে তা স্পষ্টভাবেই বোঝা যেত নারীর কথা বলা হয়েছে। এছাড়া যে মুখ ও চোখের কথা বলা হয়েছে সেটিও নারী বা পুরুষ যে কারো হতে পারে। রহস্য আরও ঘনীভূত হয় যে কবিতায় নারী বা পুরুষের কোনো পোশাকের কথা বলা হয় নি। এছাড়া কোনরকম প্রসাধনী/অলংকার ব্যবহারের বর্ণনা নেই। বাঙালী নারী প্রসাধন-প্রিয়,বিশেষ করে সুন্দরী নারীরা এ ব্যাপারে আরো সচেতন। বনলতা সেন পুরুষ বলেই কি এসব কবির নজরে আসেনি ?   

কে এই বনলতা সেন?


এরপরই যে প্রশ্নটি আসে সেটি হলো, কে এই বনলতা সেন? বনলতা সেন নামের কোনো মেয়ের সঙ্গে কি জীবনানন্দ দাশের আদৌ পরিচয় ছিল? গোপালচন্দ্র রায় একবার কবিকে জিজ্ঞাসাও করেছিলেন, ‘দাদা, আপনি যে লিখেছেন নাটোরের বনলতা সেন, এই বনলতা সেনটা কে? এই নামে সত্যি আপনার পরিচিত কেউ ছিল নাকি?’  উত্তরে কবি শুধুমাত্র একগাল মুচকি হাসি দিয়েছিলেন। কবি কখনো নিজের অজান্তেও এই বিষয়ে কারো কাছে কিছু বলেননি। কবি নীরব থাকলেও যুগ যুগ ধরে গবেষকরা এই বনলতা সেনকে খুঁজে ফিরছেন। কিন্তু ফলাফল বরাবরই শূন্য। বাস্তবে এমন কোনো বনলতা সেনের অস্তিত্ব তারা বের করতে পারেননি।

পুরো কবিতায় মাত্র তিনবার:


জীবনানন্দ দাশের বনলতা সেন কবিতায় মাত্র তিনবার ‘বনলতা সেন’ নামটি এসেছে। অথচ পুরো কবিতার অন্য আর কোনো কিছু নিয়ে মানুষের কোনো মাথা ব্যথা নেই। সবাই পড়ে আছেন শুধুমাত্র এই বনলতা সেনকে নিয়ে। থাকাটাই স্বাভাবিক। কেননা এখানে যে নারী নারী গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। 

বাংলা সাহিত্যে নাটোরের বিখ্যাত হয়ে ওঠা:

এই কবিতায় জীবনানন্দ দাশ বনলতা সেনের বাড়ি উল্লেখ করেছেন নাটোর জেলাকে। এরপর থেকে বাংলা সাহিত্যে নাটোর জেলা বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। এই নাটোর নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। যেমন - কবি কি কখনো নাটোরে পদার্পণ করেছিলেন? জীবনানন্দ দাশের অন্য কোনো লেখায় নাটোরের উল্লেখ পাওয়া যায় নি। তাই এই বিষয়টিও অমীমাংসিতই রয়ে গেছে।

স্থানীয়ভাবে গড়ে উঠেছে আরও অনেক কাহিনী:


কবি জীবনানন্দ দাশ বাস্তবের কোনো ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে নাকি কল্পনার কাউকে উদ্দেশ্য করে কবিতাটি লিখেছেন তা এখনো কোনো গবেষক কূলকিনারা করতে পারেন নি। তবে নাটোরের মানুষের কাছে ‘বনলতা সেন’ একজন রক্ত মাংসের মানুষ। নাটোরে স্থানীয়ভাবে ‘বনলতা সেন’ কে নিয়ে বেশকিছু কাহিনী গড়ে উঠেছে। কিন্তু এর বাস্তবিক কোনো ভিত্তি নেই। কেননা ইতিহাসে এসব কাহিনীর কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই।

নাটোরে প্রচলিত একটি কাহিনীতে দেখা যাচ্ছে একসময় ট্রেনে করে দার্জিলিং যেতে হলে নাটোরের উপর দিয়ে যেতে হতো। একদিন জীবনানন্দ দাশ ট্রেনে করে দার্জিলিং যাচ্ছিলেন। ট্রেনটি যখন নাটোর স্টেশনে পৌঁছায় তখন অপরূপ সুন্দরী একটি মেয়ে ট্রেনে ওঠে। মেয়েটির সাথে ভুবন সেন নামে একজন বৃদ্ধও ছিল। কবি যে কামরায় ছিলেন সেই কামরাতেই তারা উঠেন। কামরায় শুধুমাত্র এই তিনজনই ছিলেন। ভুবন সেন ছিলেন নাটোরের বনেদি সুকুল পরিবারের তারাপদ সুকুলের ম্যানেজার। অপরূপ সুন্দরী সেই মেয়েটি ছিল ভুবন সেনের বিধবা বোন ‘বনলতা সেন’। একসময় ভুবন সেন ঘুমিয়ে পড়েন। এসময় বনলতা সেনের সাথে কবির আলাপচারিতা জমে ওঠে। এভাবে অনেকটা সময় তারা এভাবেই গল্প করে কাটিয়েছেন। এক সময় ‘বনলতা সেন’ ট্রেন থেকে নেমে যায়। কবি আবার একা হয়ে যান। ‘বনলতা সেন’ কবিতার একটি লাইন এখানে বিশেষভাবে ফুটে ওঠে। তা হলো - ‘থাকে শুধু অন্ধকার মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন’। 

অপর যে কাহিনীটি রয়েছে সেটিতেও ভুবন সেনের কথা বলা হয়েছে। এখানে ‘বনলতা সেন’ ভুবন সেনের বিধবা বোন ও ঘটনাস্থল ট্রেনের বদলে ভুবন সেনের বাড়ির কথা বলা হয়েছে এবং নাটোরের বনেদি পরিবার সুকুল বাবুর কথাও বলা হয়েছে। কবি একদিন নাটোর বেড়াতে যান। নাটোর গিয়ে তিনি সুকুল বাবুর বাড়িতে ওঠেন। একদিন দুপুরে ভুবন সেন কবিকে তার বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেন। কবিকে আপ্যায়ন করার দায়িত্ব দেয়া হয় ভুবন সেনের বিধবা বোন ‘বনলতা সেন’ কে।    

দ্বিতীয় কাহিনীর কেন্দ্রেও আছেন ভুবন সেনের বিধবা বোন বনলতা। তবে ঘটনাস্থল এবার ট্রেন নয়, ভুবন সেনের বাড়ি। নাটোরে বেড়াতে গেছেন জীবনানন্দ। অতিথি হয়েছেন নাটোরের বনেদি পরিবার সুকুলবাবুর বাড়িতে। এক দুপুরে সুুকুল এস্টেটের ম্যানেজার ভুবন সেনের বাড়িতে নিমন্ত্রণ। ভুবন সেনের বিধবা বোন বনলতা সেনের ওপর পড়েছে অতিথি আপ্যায়নের দায়িত্ব। খাবারের বিছানায় বসে আছেন কবি। হঠাৎ অবগুন্ঠিত এক বিধবা বালিকা। শ্বেত শুভ্র বসনের চেয়েও অপরূপ এক সৌন্দর্যমন্ডিত মুখ। চমকে উঠলেন কবি। এত অল্প বয়সে বিধবা বসন কবির মনকে আলোড়িত করে। হয়তো সে সময় দু-একটি কথাও হয় কবির সঙ্গে বনলতার। তারপর একসময় নাটোর ছেড়ে যান কবি। সঙ্গে নিয়ে যান এক অপরূপ মুখের ছবি। সেই ছবিই হয়তো কবিকে পথ দেখিয়েছে অন্ধকারে, চারদিকে সমুদ্র সফেনের ভেতরও খুঁজে পেয়েছেন শান্তির পরশ।

সর্বশেষ ও তৃতীয় একটি কাহিনী নাটোরে প্রচলিত রয়েছে। তবে এবার ঘটনাস্থল নাটোরের রাজবাড়ি। কোনো এক সময় নাটোরের কোনো এক রাজার আমন্ত্রণে রাজবাড়িতে বেড়াতে আসেন কবি জীবনানন্দ দাশ। কবির দেখাশোনা করার জন্য রাজা কয়েকজন সুন্দরীকে দায়িত্ব দেন। এদের মধ্যে একজন সুন্দরীর প্রতি কবির আলাদা মমতা জেগে ওঠে। কবি সেই সুন্দরীকে নিয়ে কবিতা লেখার কথা জানালে সেই সুন্দরী তাতে মত দেয় না। শেষে কবির পীড়াপীড়িতে কবিকে অন্য কোনো নামে কবিতা লেখার অনুরোধ করেন। তাই তো সেই সুন্দরীর প্রকৃত নাম লুকিয়ে ‘বনলতা সেন’ নামটি উল্লেখ করেন। 

গল্প-কাহিনী যত যাই থাক। কোনোটিরই বাস্তবিক কোনো ভিত্তি ও ইতিহাস সূত্র বহন করে না। বাঘা বাঘা সব গবেষকরাও বছরের পর বছর গবেষণা করে এই ‘বনলতা সেন’ রহস্য উদঘাটন করতে পারেন নি। বিশ্বের আর দশটা রহস্যের মতো এটিও একটি অজানা রহস্য হিসেবেই রয়ে গেছে।

নিক বায়োসিস: স্বপ্নবাজ এক অদম্য তরুণের গল্প

ঢাকার বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে মাটিতে হামাগুড়ি দিয়ে এক ধরনের লোকদের মানুষের কাছে হাত পাততে দেখা যায়। যাদের কারো হাত নেই, কারও পা নেই। অনেকের আবার দেখা যায়, হাত বা পায়ে সামান্য একটু সমস্যা রয়েছে। যার কারণে তারা রাস্তায় শুয়ে বসে মানুষের কাছে হাত পাতছে। তাদেরকে আমরা ভিক্ষুক বলে চিনি। এরা সাধারণত জন্মগতভাবেই এ ধরনের শারীরিক ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। এদেরকে বলা হয় বিকলাঙ্গ। স্বাভাবিকভাবেই কোনো কাজ কর্ম করতে না পারায় তারা পথে ঘাটে ঘুরে মানুষের কাছে হাত পেতে জীবিকা নির্বাহ করে। এটাই স্বাভাবিক ঘটনা। তবে সব স্বাভাবিক ঘটনাকে অস্বাভাবিক করে একজন মানুষ এখনো বিশ্বের লাখ লাখ মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়ে চলেছেন। তিনি হলেন নিক বায়োসিস। জন্মগতভাবে বিকলাঙ্গ এই মানুষটির হাত বা পা কোনোটিই নেই। তারপরও তিনি সামনের দিকে এগিয়ে গিয়েছেন।


নিক বায়োসিস এর জন্মের আগে তাকে নিয়ে তার বাবা-মায়ের আকাশ ছোয়া স্বপ্ন ছিল। কোনো বাবা-মাই ঘুনাক্ষরেও কল্পনা করতে পারেন না যে তাদের সন্তান শারীরিক কোনো ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করুক। নিকের বাবা-মায়ের স্বপ্নকে ধুলিসাৎ করে ১৯৮২ সালের ৪ ডিসেম্বর অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের  একটি হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের সময় হাত-পা বিহীন আজব এক শিশুকে দেখে অনেকেই ভড়কে উঠেন। নিকের অস্বাভাবিক জন্মের কারন চিকিৎসকগন কিছুতেই খুজে বের করতে পারলেন না। নিকের মায়ের গর্ভবর্তী অবস্থায় শারীরিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিরিক্ষার রির্পোট দেখা হলো, নিকের বাবা-মায়ের বংশের ইতিহাস বৃত্তান্ত খুজে দেখা হলো কিন্তু কোন কারন পাওয়া গেলো না। সূতরাং নিকের বাবা-মাকে মেনে নিতে হলো নিক অস্বাভাবিক এবং বিকলাঙ্গ । নিকের পরিচয় হলো বিকলাঙ্গ শিশু।

নিকের ডাক নাম ‘নিকোলাস’। তার পিতার নাম পোস্টার বরিস বায়োসিস এবং মায়ের নাম ডুসকা। নিকের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে চরম হতাশার মধ্যে পড়ে যায় নিকের বাবা-মা। এভাবেই নিক এক চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে বড় হতে থাকে। যেহেতু নিক ছোট বেলা থেকেই চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে বেড়ে উঠেছিল, সূতরাং কেউ কোন দিন কল্পনা করতে পারেনি বিকলাঙ্গ এই সুন্দর শিশুটি একদিন পৃথিবীর সব মানুষকে যারা বিকলাঙ্গ নয় কিংবা বিকলাঙ্গ সবাইকে অন্যভাবে বাঁচার পজেটিভ স্বপ্ন দেখাবে, পৃথিবীকে বদলে দেওয়ার আহবান জানাবে।


তবে জীবনের শুরুটা ছিল বড়ই কষ্টকর। একে তো হাত-পা নেই, তার উপর রয়েছে মানুষের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। স্কুলে পড়াকালীন সময়ে নিক যখন দেখতো তার বন্ধুরা খেলাধুলা করছে তখন সেই দৃশ্য দেখে হতাশ হয়ে পড়তেন। অস্বাভাবিক হওয়ায় কেউ তার সাথে বন্ধুত্বও করে নি। এরকম কোনো পরিস্থিতিতে কোনো স্বাভাবিক মানুষের পক্ষেও টিকে থাকা অসম্ভব। আর সেখানে হাত-পা বিহীন এই মানুষটি ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে থাকেন।

স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টাও করেছিলেন:

আর দশজনের মতো নিকও স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করার জন্য কৃত্রিম যন্ত্রপাতির দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু ভাগ্য বরাবরই বলা চলে অট্টহাসি হেবে নিকের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। যখন নিকের শরীরে ইলেকট্রনিকস অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ট্রায়াল করা হয় তখন দেখা যায় ভারী ভারী এসব যন্ত্রপাতি নিয়ে নিক চলাফেরা করতে পারে না। তাই কৃত্রিম যন্ত্রপাতির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন নিক এবং ভাগ্যকে উল্টো অট্ট হাসি দেখিয়ে মনে মনে ঠিক করেন হাত-পা ছাড়াই পুরো বিশ্বকে আমি জয় করবো।

নিজে নিজেই আবিষ্কার করলেন স্বাভাবিক হওয়ার কৌশল:

নিক নিজেই তার সব প্রতিবন্ধকতাকে জয় করার জন্য নিজেই নিজের সমস্যা সমাধানের জন্য পথ বের করতে লাগলো। দু’হাত এবং দু’পা না থাকলেও নিক নিজে নিজেই বের করলো কিভাবে দাঁত ব্রাশ করতে হবে, চুল সুন্দর করে আচড়াতে হবে, কম্পিউটারে ব্রাউজ করতে হবে, সাতার কাটতে হবে। নিক এখন নিজের মতো করে অনেক কিছুই করতে পারে। নিকের জীবনে এভাবেই সফলতা আসতে লাগলো যখন সে সব অনাকাঙ্কিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শিখলো।

সফলতার শুরু:
আমাদের দেশে ব্যতিক্রম ধর্মী কিছু মানুষ দেখা যায়, যাদের হাত না থাকায় পা দিয়ে লেখেন। আবার অনেকে আছেন যাদের হাত-পা কোনোটি না থাকায় মুখ দিয়ে লেখেন। এভাবে বড়জোড় পাশ করা যায়। কিন্তু নিক বায়োসিস ৭ম শ্রেণিতে হয়েছিলেন ক্লাস ক্যাপ্টেন। সত্যিই এ এক আত্মবিশ্বাসের পাহাড়। স্কুলে পড়াকালীন সময়েই নিক বায়োসিস স্টুডেন্ট কাউন্সিলর হিসেবে জনকল্যাণমূলক কাজ করতে শুরু করেন। তার কাজের ক্ষেত্র ছিল বিকলাঙ্গ শিশুদের সমস্যা সমাধান ও প্রেরণা প্রদান। এ লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচী পরিচালনা করতে শুরু করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশ:

স্কুলের পাঠ শেষ করে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পালা। নিকের বয়স যখন ১৯ বছর তখন তিনি অর্থনীতি ও অ্যাকাউন্টিং বিষয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন। পড়াশোনার পর্ব চুকিয়ে এবার নিক পুরোদস্তুর মানবকল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করেন। বিভিন্ন ধরনের সভা – সেমিনারে নিক তার নিজের জীবনের প্রতিকূল অবস্থাকে জয় করার গল্প শুনিয়ে মানুষের মধ্যে অনুপ্রেরণা প্রদান করা শুরু করেন। সব জায়গাতেই তিনি মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং সেই স্বপ্ন কিভাবে বাস্তবায়িত করতে হয় তার উপায়ও বলে দিয়েছেন।

৩২ বছরের সংগ্রামী জীবন:
দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে শুধুমাত্র স্বপ্নকে পুঁজি করা এই মানুষটিকে জীবনের সাথে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। বহু মানুষকে তিনি স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তার দেখানো স্বপ্নে অনেক মানুষ নতুন করে বাঁচতে শিখেছে, অনেক মানুষ নতুন করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। নিক যাদেরকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন তারা সবাই বিকলাঙ্গ নয়, তাদের সবার স্বাভাবিক হাত-পা সবই রয়েছে। তারপরও তারা হতাশার কারণে জীবনের ছন্দপতন হারিয়ে ফেলেন। নিক সেই সব মানুষদের হতাশা কাটিয়ে কিভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায় সেই পথ দেখিয়েছেন। কিন্তু তার এই চলার পথে কেউ তাকে উৎসাহ দিয়েছে, আবার অনেকে তাকে নিয়ে কটাক্ষ করেছে। তবুও স্বপ্ন দেখানো থেকে পিছপা হননি অদম্য এই মানুষটি। নিক এখন একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার প্রেসিডেন্ট। এছাড়াও নিকের নিজের একটি কোম্পানী রয়েছে যার মাধ্যমে নিক বিভিন্ন স্কুলে, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিভিন্ন সংস্থায় মানুষকে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের উৎসাহ, উদ্দিপনামুলক বক্তব্য রাখেন। নিকের কোম্পানীর নাম - অঃঃরঃঁফব রং অষঃরঃঁফব. দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে মানুষের জন্য কাজ করার পরও নিক তৃপ্ত নন। তার মতে, তার এখনো অনেক কাজ বাকি। সারা বিশ্ব চষে বেড়াচ্ছেন স্বপ্নবাজ এই মানুষটি।

পুরষ্কার:
যে মানুষটি আর দশজনের মতো স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন না, সেই মানুষটি মাত্র ৩২ বছর বয়সে যা করেছেন তা ৬২ বছর বয়সেও অনেক সুস্থ্য স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে করা সম্ভব নয়। অদম্য এই মানুষটিকে অস্ট্রেলিয়া সরকার ২০০৫ সালে সর্বোচ্চ সম্মানের ‘ণড়ঁহম অঁংঃৎধষরধহ ড়ভ ঞযব ণবধৎ’ প্রদান করেন।

প্রেম-ভালোবাসা, বিয়ে ও সংসার:
এমন একটি মানুষকে কেউ বিয়ে করবে এমন কথা অনেকেই ভাবতে পারছেন না। কিন্তু তাদের ভাবনাকে মিথ্যে প্রমাণিত করে “Kanae Miyahara” নামের এক তরুণীর সাথে ২০১২ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে সেটা পারিবারিকভাবে নয়, প্রথমে প্রেম তারপর বিয়ে। অবাক হওয়ার কিছু নেই। প্রেম-ভালোবাসা সুন্দর চেহারা, শারীরিক গঠন দেখে হয় না। প্রেম-ভালোবাসা মনের বিষয়। রোমিও-জুলিয়েট, শাহজাহান-মমতাজের প্রেমও তাদের প্রেমের কাছে কিছুই না। প্রথমে ইন্টারনেটে তাদের দুজনের পরিচয় হয় এবং এই পরিচয় থেকেই তাদের দেখা সাক্ষাৎ, প্রেম-ভালোবাসা এবং পরিনয়ে বিয়ে।

যাদের কাছে কৃতজ্ঞ নিক বায়োসিস:
নিকের জীবনে তার পরিবারের সকল সদস্য, ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধু এবং শিক্ষকদের অনেকটা অবদান রয়েছে। তারাই বিভিন্ন প্রতিকূল মুহূর্তে নিকের পাশে এসে দাঁড়িয়েঁছেন। নিক বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন আর নিককে স্বপ্ন দেখাতে প্রেরণা দিয়েছেন এই মানুষগুলো।

নিক থেকে আমরা যা শিখতে পারি:
এই মানুষটির হাত-পা কোনোটিই নেই। তারপরও তিনি বিশ্বকে জয় করেছেন নিজের মতো করে। আমাদের মধ্যে এমন অনেকে আছেন যাদের হাত-পা, মেধা, সুযোগ সব কিছুই রয়েছে। তারপরও আমরা মনের দিক থেকে বিকলাঙ্গ হয়ে বসে আছি। নিক আমাদের সেটিই বোঝাতে চেয়েছেন যে, স্বপ্ন দেখ এবং সেই মোতাবেক কাজ কর। সফলতার পিছনে আমাদের ছুটতে হবে না, সময় হলে সফলতা নিজেই আমাদের পিছনে ছুটবে। আমাদের শুধু লক্ষ্য অনুযায়ী কাজ করে যেতে হবে।

মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০১৪

বাংলাদেশে বাল্য বিয়ের হার গ্রামে ৭১ আর শহরে ৫৪ শতাংশ

আব্দুল্লাহ আল মামুন: বাংলাদেশে এক-তৃতীয়াংশ কন্যাশিশুর বিয়ে হয় ১৫ বছরের আগে। আর দুই-তৃতীয়াংশের বিয়ে হয় ১৮ বছরের নিচে। গ্রামে এ হার ৭১ শতাংশ এবং শহরে ৫৪ শতাংশ। এমনই এক চিত্র উঠে এসেছে বাংলাদেশ জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের এক গবেষণায়।সম্প্রতি সংগঠনটি শরীয়তপুর জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে পাঁচটি যথাক্রমে শরীয়তপুর সদর, ডামুড্যা, নড়িয়া, গোসাইরহাট এবং ভেদরগঞ্জ উপজেলায় এক গবেষণা পরিচালনা করে। গবেষণায় উঠে আসে ওই জেলার কন্যা শিশুদের অকাল বিয়ের পরিমাণ, কারণ এবং ফলাফল।

গবেষণায় দেখা দেখা গেছে, সেখানে মোট পুরুষের ৯২ শতাংশ বাল্যবিবাহ সম্পর্কে শুনেছেন এবং নারীদের ক্ষেত্রে এই হার ৯৩ শতাংশ। তারা কেউ শুনেছেন মিডিয়ার মাধ্যমে, কেউ এনজিও’র মাধ্যমে, কেউ শিক্ষকের কাছে। তবে বাল্যবিবাহ সম্পর্কে ধারণার ক্ষেত্রে উত্তরদাতাদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মতামত পরিলক্ষিত হয়েছে।

বাল্যবিবাহের শাস্তি সম্পর্কে অধিকাংশের স্বচ্ছ ধারণা নেই বলে প্রতীয়মান হয়েছে। তবে অধিকাংশ আইনজীবী, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি আইনের দুর্বলতার কথা বললেও সরকারি কর্মকতা যেমন- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ১৯২৯ সালের বিদ্যমান আইনের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা যায় বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।

সেখানকার গবেষণার আওতাভুক্ত শরীয়তপুরকে বাল্যবিবাহ প্রবণ এলাকা বলে অভিহিত করেছেন কেউ কেউ। তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শরীয়তপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত মোট ১৩ জন ছাত্রী বিবাহিত,  যারা ২০১৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন এবং তাদের প্রত্যেকের ১৫ বছরের পূর্বে বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে।

গবেষণায় আরো উঠে আসে, শরীয়তপুরে বাল্যবিবাহের ধরনের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ১৮ বছরের কম বয়সের মেয়ের সঙ্গে অধিক বয়সের ছেলে, কখনো বা দ্বিগুণ বয়সের ছেলের বিবাহ সম্পন্ন।

শরীয়তপুরে বাল্যবিবাহের কারণ সম্পর্কে গবেষণায় যা উঠে এসেছে সচেতনতার অভাব, দারিদ্র্য, আনুষ্ঠানিক শিক্ষার অভাব, নিরাপত্তাহীনতা, যৌতুক অন্যতম।

বাল্যবিবাহের ফলে যে প্রভাব পরিলক্ষিত হয় তা হচ্ছে শারীরিক দুর্বলতা, মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বৃদ্ধি, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দাম্পত্য কলহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, বহু বিবাহ।

বাল্য বিবাহের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে দেখা যায়, প্রশাসনিক পদক্ষেপ, বেসরকারি নজরদারি, সচেতনতামূলক কার্যক্রম, নারী শিক্ষার প্রসার প্রভৃতি কারণে শরীয়তপুরে বাল্য বিবাহের প্রবণতা পূর্বের চেয়ে হ্রাস পেয়েছে।

বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে শরীয়তপুরে সরকারি কোনো ভূমিকা আছে কি না- এমন প্রশ্নে অধিকাংশই মনে করেন, সরকারিভাবে ভূমিকা রাখা হচ্ছে। বিশেষ করে জরিপে অংশ নেওয়া ৮৯ শতাংশ উত্তরদাতা তেমনটিই মনে করেন। তবে গৃহীত পদক্ষেপ কতটা কার্যকর- এমন প্রশ্নে বেশিরভাগ উত্তরদাতা মনে করেন, সরকারিভাবে গৃহীত পদক্ষেপ কার্যকরভাবে বাল্যবিবাহ রোধ করতে পারছে না। এছাড়া স্থানীয় সরকারের ভূমিকাও যথেষ্ট নয়।

এছাড়া, শরীয়তপুরে খুব অল্প সংখ্যক এনজিও এবং মিডিয়াসহ ছাত্র-ছাত্রী, নাগরিক সমাজ, বিবাহ নিবন্ধক বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

গবেষণায় উঠেআসা পর্যালোচনা সাপেক্ষে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে কিছু  সুপারিশ তুলে ধরা হয়। তার মধ্যে অন্যতম হলো- বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৩’-এর পরিবর্তে ‘শিশুবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৩’ করা; ‘বাল্যবিবাহ’ শব্দটির পরিবর্তে ‘শিশুবিবাহ’ শব্দটি সর্বত্র ব্যবহার করা; বাল্যবিবাহ সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে কমপক্ষে দশম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে বাল্যবিবাহ সম্পর্কে চ্যাপ্টার সংযোজন করা,  বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিশেষ প্রচার চালানো, এক্ষত্রে গণমাধ্যমের সহায়তা নেওয়া, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-১৯২৯ সংশোধন সাপেক্ষে সময়োপযোগী করা, আইনে শাস্তির পরিমাণ বৃদ্ধি ও কঠোর করা,  নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বয়স বৃদ্ধিরোধ করতে প্রশাসনিক পর্যায়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে চলমান আইনের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিতকরণে প্রশাসনিক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, স্থানীয় সরকার পর্যায়ে জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল করা, জন্ম সনদে বয়স বৃদ্ধিরোধে সরকারি মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার, বিবাহ নিবন্ধকের জন্য সরকারিভাবে কার্যকর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রবাসীপাত্রের সাথে বিবাহ দেওয়াকে নিরুৎসাহিত করতে সামাজিক প্রচার এবং বিবাহ প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা।

এ সম্পর্কে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, আগের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনটির বিভিন্ন ফাঁকফোকর থাকার কারণে বাল্যবিবাহ নির্মূল  করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে আইনটি পরিবর্তন করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এ বছরের মধ্যে বিভিন্ন সংগঠনের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত বাল্যবিবাহ আইন (খসড়া) ২০১৩ এর সংশোধনী আইন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আর আইনটি বাস্তবায়ন করা হবে আমাদের সামাজিক ও ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে।

অপরাজেয় বাংলাদেশ সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানু বলেন, সমাজে নারী ও শিশু হলো ব্যারোমিটারের মতো। যে সমাজে নারী ও শিশুকে বাদ দেওয়া হয় সে সমাজকে ন্যায্য সমাজ বলা যায় না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে স্পষ্টকরে শিশু ও নারীর অধিকার উল্লেখ করা আছে। কিন্তু আইনের বাস্তবায়ন হয়। 
তিনি আরো বলেন, দেশে অভিভাবকরা বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে এখনো সচেতন হননি। বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হলে প্রথমে ঘরের ভেতরটা পরিবর্তন করতে হবে। ঘরের ভেতরটা পরিবর্তন না করলে বারবার পিছিয়ে যাব।

সোমবার, ২৩ জুন, ২০১৪

শকুন নাই, তাই পশুর অ্যানথ্রাক্স, জলাতঙ্ক রোগ বাড়ছে!

শকুন একটি উপকারি পাখি। কিন্তু আমাদের অবহেলা আর অজ্ঞতার কারনে বাংলাদেশ থেকে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে উপকারি এই প্রাণীটি। বাংলাদেশ থেকে শকুন বিলুপ্তির ফলে ‘অ্যানথ্রাক্স, জলাতঙ্ক, যক্ষা, খুরা রোগসহ বিভিন্ন জুনোটিক’ (পশু হতে সংক্রমিত) রোগের হার বেড়ে যাচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গবেষকরা।

তারা জানান, শকুনের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে প্রতিবেশী দেশ গুলতে অ্যানথ্রাক্স ও জলাতঙ্কের মত পশুর প্রাণঘাতি রোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। শকুন কমে যাওয়ায় এখন বাংলাদেশেও এসব রোগের প্রভাব বাড়ছে। এছাড়া শকুন বিলুপ্তির ফলে শুধু পশুই নয়, বাংলাদেশের মানুষও দিন দিন মারাত্বক রোগের ঝুঁকিতে পড়ছে।

সোমবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আই ইউ সি এন বাংলাদেশের আয়োজনে ‘পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর আসন্ন শকুন বিলুপ্তির প্রভাব’ শীর্ষক গোলটেবিল অনুষ্ঠানে বক্তরা এসব কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে প্রায় ৫০ হাজার শকুন ছিল। এখন আছে মাত্র এক
হাজার। দেশে ৭ প্রজাতির শকুন থাকলেও স্থায়ীভাবে বাস করছে মাত্র দুই প্রজাতির শকুন। রাজ-শকুন ও সরুছুঁটি-শকুন সম্প্রতি বিলুপ্ত হয়েছে। সবশেষে এখন বাংলা-শকুনও বিলুপ্ত হতে চলেছে।


শকুন মারা যাওয়ার কারণ হিসেবে গবেষকরা জানান, পশু চিকিৎসায় বিষাক্ত ওষুধ ‘ডাইক্লোফেনাফ’ ও ‘কিটোপ্রোফেন’ ব্যবহার করার কারণেই শকুন মারা যাচ্ছে। কারণ এসব ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছে এমন গরু ছাগলের মৃতদেহ খেলে শকুনের কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। আর ‘ডাইক্লোফেনাফ’ ও ‘কিটোপ্রোফেন’ ওষুধ এতই মারাত্বক যে, এর মাত্র ৩০ মিলিলিটার দিয়ে ৫০০ শকুন মারা সম্ভব।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে  ও আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতে পশু চিকিৎসায় ‘ডাইক্লোফেনাফ’ নিষিদ্ধ হয়েছে কিন্তু ‘কিটোপ্রোফেন’ এখনও নিষিদ্ধ করা হয়নি। এটি নিষিদ্ধ করা জরুরী। কারণ এগুলো বিষাক্ত ওষুধ বলেই ২০০৬ সালে পাকিস্তানে এবং ২০০৯ সালে নেপালে ডাইক্লোফেনের পরিবর্তে মেলোক্সিক্যামসহ অন্যান্য বিকল্প ওষুধ ব্যবহার করছেন তারা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এম এ মান্নান বলেন, শকুন কোনো জীবিত প্রাণী খায় না। এরা পরিবেশেরও ক্ষতি করে না। বিভিন্ন প্রাণীর মৃত দেহ খেয়ে নানা রকম মারাত্বক রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে মানুষ ও পরিবেশকে রক্ষা করে। তাই এই প্রজাতিটি রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

অনুষ্ঠানে অতিরিক্তি অর্থ সচিব জামাল আহমেদ আশ্বাস দিয়ে বলেন, পরিবেশ ও বন বিভাগ যদি শকুন রক্ষায় কোনো প্রকল্প গ্রহণ করে। তাহলে সেক্ষেত্রে অর্থ বিভাগ অর্থ বরাদ্দ দিয়ে সহায়তা করবে।

সভায় আই ইউ সি এন-এর বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইশতিয়াক উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, ক্রিস বাউডেন, ইনাম আল হক, ড. মনিরুল খান, ড. তপন দে প্রমুখ।

বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০১৪

সফল উদ্যোক্তা ওয়ারেন বাফেট

ব্যতিক্রম বিশ্ব ব্যক্তিত্ব ওয়ারেন বাফেট
ওয়ারেন বাফেট। এক সময় মুদি দোকানে কাজ করতেন। ছিলেন হকার। বিক্রি করতেন সংবাদপত্র। এখন দুনিয়ার দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী। বর্তমানে ৬৩টি কোম্পানির মালিক। এ পর্যন্ত ৩ হাজার ১০০ কোটি ডলার দান করেছেন বিভিন্ন দাতব্য সংস্থায়। তারপরও তিনি ৪ হাজার কোটি ডলারের মালিক। এখন তার নামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অনেক বিশেষণ। মার্কিন বিনিয়োগকারী, ব্যবসায়ী এবং লোকহিতৈষী বলে পরিচিতি পেয়েছেন। অনেকে তাকে মিরাকল অব ওমাহানামে ডাকেন। এত বিত্তবেসাতের মালিক হয়েও তার মধ্যে নেই কোন বিলাসিতা।

জীবন যাপন করেন অতি সাধারণ মানের। ৫০ বছর আগে বিয়ের পরে ৩ বেডরুমের যে বাড়িটি কিনেছিলেন এখনও সেখানেই বাস করেন। এমনকি বাড়িটির চারপাশে নেই কোন আলাদা প্রাচীর। তিনি বলেন, আমার যা কিছু দরকার তার সবই আছে এখানে। বিশ্বের এত বড় ধনী, তার বাসার চারদিকে নেই কোন বেড়া বা সীমানা প্রাচীর। এ বিষয়ে তার পরামর্শ হলো- প্রকৃতপক্ষে আপনার যতটুকু দরকার তার বেশি কিছু কিনবেন না। আপনার সন্তানদেরও এমনটা ভাবতে ও করতে শেখান। নিজের গাড়ি তিনি নিজেই চালান। তার আছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জেট কোম্পানি। কিন্তু ভ্রমণ করেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে ইকোনমিক ক্লাসে। অনেকেই ভাবতে পারেন, এটা অসম্ভব। কিন্তু তিনি তা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন।

 সমপ্রতি তিনি সিএনবিসি-কে এক ঘণ্টার একটি সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে তুলে ধরেছেন জীবনের উত্থান কাহিনী। তার মতে, জীবনে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য নিজেকে আগে স্থির করতে হয় তার লক্ষ্য। তিনি এমনই এক লক্ষ্য নিয়ে মাত্র ১১ বছর বয়সে প্রথম শেয়ার কিনেছিলেন। তারপরও তিনি মনে করেন এ ব্যবসায় আসতে তার অনেক দেরি হয়ে গেছে। আরও আগে ব্যবসা শুরু করা উচিত ছিল। তাই তার পরামর্শ আপনার সন্তানকে বিনিয়োগে উৎসাহিত কর্বন। সংবাদপত্র বিক্রি করা অর্থ দিয়ে তিনি মাত্র ১৪ বছর বয়সে ছোট্ট একটি ফার্ম কেনেন। তার মতে, অল্প অল্প করে জমানো অর্থ দিয়ে যে কেউ কিনতে পারেন অনেক কিছু। সেজন্য সন্তানদের তিনি কোন না কোন ব্যবসায় নিয়োজিত করার পরামর্শ দেন।

১৯৩০ সালের ৩০শে আগস্ট নেবরাসকার ওমাহা এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন এই বরেণ্য ব্যক্তি। তার পিতার নাম হাওয়ার্ড বাফেট। ওয়ারেন হলেন তিন ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়। শৈশবে কাজ করেছেন মুদির দোকানে । মাত্র ১৩ বছর বয়সে ১৯৪৩ সালে তিনি জমা দেন আয়কর রিটার্ন। সেখানে তিনি নিজেকে সংবাদপত্র বিলিকারী হিসেবে পরিচয় দেন। তার পিতা হাওয়ার্ড যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর পর তিনি পড়াশোনা করেন ওয়াশিংটনের উডরো উইলসন হাই স্কুলে। ১৯৪৫ সালে তিনি হাই স্কুলে থাকতেই এক বন্ধুর সঙ্গে ব্যবহার করা একটি পিনবল মেশিন কেনেন মাত্র ২৫ ডলারে। মেশিনটি বসানোর মতো জায়গা ছিল না তাদের। তারা এক নাপিতের দোকানের ভেতরে তা বসিয়ে দিলেন। এর মাত্র কয়েক মাসের মাথায় তারা বিভিন্ন স্থানে বসালেন একই রকম তিনটি মেশিন। এভাবেই তার ব্যবসায় যাত্রা শুর্ব। তিনি ১৯৫০ সালে ইউনিভার্সিটি অব নেবরাসকা থেকে অর্থনীতিতে অর্জন করেন বিএস ডিগ্রি। ১৯৫১ সালে কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে এমএস হন। ১৯৫১ থেকে ৫৪ পর্যন্ত বাফেট-ফক অ্যান্ড কো.-তে ইনভেস্টম্যান সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করেন।

নিউ ইয়র্কের গ্রাহাম-নিউম্যান করপোরেশনে সিকিউরিটি এনালিস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৫৪ থেকে ৫৬ পর্যন্ত। এছাড়া তিনি বাফেট পার্টনারশিপ লি., বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে ইনস্যুরেন্সসহ বিভিন্ন সংস্থায় চাকরি করেছেন। এর বেশির ভাগই তার নিজের। ১৯৬২ সালে তিনি পরিণত হন মিলিয়নিয়ারে। বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে হলো একটি টেক্সটাইল কারখানা। এখানকার প্রতিটি শেয়ার তিনি ৭.৬০ ডলারে জনগণের মাঝে ছেড়ে দেন। এক পর্যায়ে ১৯৬৫ সালে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে কোম্পানি ১৪.৮৬ ডলার দেয়। এর মধ্যে ফ্যাক্টরি এবং সরঞ্জাম দেখানো হয়নি। এরপর তিনি বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কেন চেস-এর নাম ঘোষণা করেন। ১৯৭০ সালে তিনি শেয়ার হোল্ডারদের কাছে বিশেষভাবে পরিচিত চিঠি লেখা শুর্ব করেন। শেয়ারহোল্ডারদের কাছে এ চিঠি ভীষণ জনপ্রিয়তা পায়। এ সময়ে বেতন হিসেবে তিনি বছরে পেতেন ৫০ হাজার ডলার। ১৯৭৯ সালে তার বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে প্রতি শেয়ারের জন্য ৭৭৫ ডলার দিয়ে ব্যবসা করতে থাকে। এই শেয়ারের দাম ১৩১০ ডলার পর্যন্ত ওঠে। এ সময়ে তার নিট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৬২ কোটি ডলার। এর ফলে ফরবিস ম্যাগাজিনে প্রথমবারের জন্য তিনি ফরবিস ৪০০-তে স্থান পান।
 
 ২০০৬ সালের জুনে তিনি ঘোষণা দেন যে, তিনি বার্কশায়ার হোল্ডিংয়ের শতকরা ৮৫ ভাগ বার্ষিক উপহার হিসেবে পাঁচটি ফাউন্ডেশনে দিয়ে দেবেন এবং তা শুরু হবে জুলাই থেকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ দেয়া হয় বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনকে। ২০০৭ সালে তিনি শেয়ারহোল্ডারদের উদ্দেশে এক চিঠিতে জানান, শিগগিরই তিনি একজন তরুন উত্তরসূরি নিয়োগ দিতে লোক খুঁজছেন। ২০০৮ সালে তিনি বিল গেটসকে হটিয়ে নিজে হন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী।

ফরবিসের মতে, তখন তার সম্পদের পরিমাণ ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলার। তবে ইয়াহুর মতে তার তখনকার সম্পদের পরিমাণ ৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। এর আগে পর পর ১৩ বছর ফরবিস ম্যাগাজিনের হিসাবে বিশ্বের এক নম্বর ধনী ছিলেন বিল গেটস। এর পর ২০০৯ সালে গেটস তার শীর্ষস্থান পুনর্বদ্ধার করেন। দ্বিতীয় স্থানে চলে আসেন ওয়ারেন বাফেট। ২০০৮ থেকে ২০০৯ অর্থবছরে ওয়ারেন বাফেট লোকসান করেছেন ১২০০ কোটি ডলার।

ব্যক্তিগত জীবন
ওয়ারেন বাফেট ১৯৫২ সালে বিয়ে করেন সুসান থম্পসনকে। তাদের রয়েছে তিন সন্তান- সুসান বাফেট, হাওয়ার্ড গ্রাহাম বাফেট এবং পিটার বাফেট। ২০০৪ সালের জুলাই মাসে স্ত্রী সুসান মারা যান। এর আগে ১৯৭৭ সাল থেকে তাদের বিচ্ছেদ না ঘটলেও তারা আলাদা বসবাস করতেন। তাদের মেয়ে সুসান ওমাহাতে বসবাস করেন। তিনি সুসান এ. বাফেট ফাউন্ডেশন-এর মাধ্যমে সেবামূলক কাজ করেন।

ওয়ারেন বাফেট ২০০৬ সালে ৭৬তম জন্মদিনে বিয়ে করেন তার দীর্ঘ দিনের সঙ্গী অ্যাস্ট্রিড মেনঙকে। ২০০৬ সালে ওয়ারেন বাফেটের বার্ষিক বেতন ছিল ১ লাখ ডলার। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে তার বেতন বেড়ে হয় ১ লাখ ৭৫ হাজার ডলার। ওমাহা এলাকার ডান্ডিতে তিনি ৩১ হাজার ৫০০ ডলার দিয়ে বর্তমান বাড়িটি কিনেছিলেন। এর বর্তমান দাম ৭ লাখ ডলার। এছাড়া ক্যালিফোর্নিয়ার লেগুনা বিচে রয়েছে তার ৪০ লাখ ডলার দামের একটি বাড়ি।


তিনি খুব ভাল তাস খেলতে জানেন। তাস খেলেন শ্যারন ওসবার্গ ও বিল গেটসের সঙ্গে। সপ্তাহে ১২ ঘণ্টা কাটে তার তাস খেলে। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে খবর প্রকাশিত হয় যে, ওয়ারেন কোন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না। তাছাড়া তার ডেস্কে নেই কোন কম্পিউটার। তার কোম্পানি বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে এখন ৬৩টি কোম্পানির মালিক। এসব কোম্পানির প্রধান নির্বাহী অফিসারকে তিনি বছরে মাত্র একটি চিঠি লেখেন। তাতে সারা বছরের কর্মকৌশল বলে দেয়া থাকে। নিয়মিত তাদেরকে নিয়ে তিনি মিটিং করেন না। এজন্য তার পরামর্শ হলো- ঠিক জায়গায় ঠিক ব্যক্তিকে নির্বাচিত কর্বন। অর্থাৎ ঠিক জায়গায় ঠিক ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হলে তাকে কাজের কথা বলে দিতে হয় না। ওয়ারেন বাফেট তার নির্বাহীদের দুটি মাত্র নিয়ম বলে দিয়েছেন। তার প্রথমটি হলো- শেয়ারহোল্ডারদের অর্থ নষ্ট করো না। দ্বিতীয় নিয়মটি হলো- প্রথম নিয়মকে ভুলে যাবে না। লক্ষ্য স্থির করো এবং সেদিকে লোকের দৃষ্টি কাড়তে চেষ্টা করো।

তার জীবনধারাকে স্পর্শ করেনি সমাজের উচ্চশ্রেণীর সামাজিকতা। তিনি নিজেই নিজের খাবার তৈরি করেন। কিছু পপকর্ন নিজেই প্রস্তুত করে খান এবং বাসায় বসে টেলিভিশন দেখেন। তার সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিল গেটসের পরিচয় হয় মাত্র ৫ বছর আগে। তখনও বিল গেটস জানতেন না যে, ওয়ারেনের সঙ্গে তার অনেকটাই মিল আছে। ফলে মাত্র আধা ঘণ্টা পর তিনি ওয়ারেনের সঙ্গে দেখা করেন। যখন ওয়ারেনের সঙ্গে তার দেখা হয় তা স্থায়ী হয়েছিল দশ ঘণ্টা। এর পর থেকেই তার ভক্ত হয়ে যান বিল গেটস।

যুব সম্প্রদায়ের জন্য ওয়ারেন বাফেটের পরামর্শ হলো- ক্রেডিট কার্ড ও ব্যাংক লোন থেকে দূরে থাকুন। নিজের যা আছে তাই বিনিয়োগ করুন। মনে রাখবেন- ক) টাকা মানুষ সৃষ্টি করে না। কিন্তু মানুষ টাকা সৃষ্টি করে। খ) যতটা সম্ভব জীবনধারাকে সহজ-সরল করার চেষ্টা করুন। গ) অন্যরা যা বলে তাই করবেন না। তাদের কথা শুনুন। তারপর আপনার যা ভাল মনে হয় তাই করুন। ঘ) অপ্রয়োজনীয় কোন বিষয়ে অর্থ খরচ করবেন না। ঙ) জীবন আপনার। সেজন্য আপনার জীবনকে চালাতে অন্যদের কেন সুযোগ দেবেন|

সুত্র : ইন্টারনেট

মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০১৪

পণ্যের মতো বিক্রি হচ্ছে সিরিয় নারীরা

বছরের পর বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের কারণে সিরিয়া এখন বিধ্বস্ত এক জনপদের নাম। দেশটির পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর শরণার্থী শিবিরে প্রতিদিন বাড়ছে সিরীয় শরণার্থীর সংখ্যা। শরণার্থীদের এই চাপ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো। একদিকে খাদ্যের সঙ্কট অন্যদিকে যেকোনো মুহূর্তে আবারও ফিরে যেতে হতে পারে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়াতে এই টানাপড়েনের ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে প্রতিটি সিরীয় শরণার্থীকে। এমতাবস্থায় শরণার্থী আশ্রয়দাতা দেশগুলোর পরিবারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে অনেকেই নিজেদের বাঁচাতে চাইছেন।
তেমনি একজন সামিরা ইসমাইল। তিনি তার ছোট বোনকে এমন এক পুরুষের কাছে বিক্রি করতে চান যে পুরুষ তার বোনকে বিয়ে করবে এবং তার গোটা পরিবারের দেখভাল করবে। সম্প্রতি সামিরা এমন এক পুরুষের দেখা পেয়েছেন যিনি সামিরার ছোট বোনের বিনিময়ে তিন হাজার ডলার প্রদান করবেন। এবং চলতি বছরের শেষার্ধে সামিরার পুরো পরিবারকে দেশে পাকাপাকিভাবে থাকার বন্দোবস্ত করে দেবে।
সামিরার পরিবার যদি আজ সিরিয়াতে থাকতো তাহলে হয়তো কোনো এক বসন্তে বিয়ে হতো তার ছোট বোনের। তার কণ্ঠেই অবশ্য ফুটে ওঠে অপারগতার সেই বেদনা, ‘এমন একটা সময় নির্ধারণ করা হতো যখন বেশি গরমও পড়বে না আবার বেশি ঠান্ডাও পড়বে না। পুরো গ্রামবাসীকে দাওয়াত দিতাম আমরা। একই সঙ্গে এটাও নিশ্চিত করতাম যে অতিথিদের যেন তিন পদের মাংস খাওয়াতে পারি। বোনের হাতে এবং গলায় স্বর্ণের গহনা পরিয়ে বিয়ে দেয়া হতো।’ 
কিন্তু সামিরাকে যখন তার পরিবার নিয়ে সিরিয়ার হোমস শহর থেকে চলে আসতে হয় তখন একই সঙ্গে তার স্বপ্নও ফেলে আসতে হয়। হোমসের প্রায় এক লাখ ষাট হাজার মানুষ যুদ্ধের ওই সময়টাতে শরণার্থী হিসেবে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে অবস্থান নিয়েছে। প্রায় আট মাস আগে সামিরা তার পরিবার নিয়ে জাতারি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় গ্রহন করেন।
জর্ডানে সামিরার মতো আরও অনেকেই শরণার্থী আছেন। তাদেরকেও টিকে থাকার তাগিদে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে তাদের কন্যা সন্তানদের। তবে এই কাজে সহায়তার জন্য তৈরি হয়েছে একদল দালাল। যারা একটি নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে কনের জন্য বর খুজে বের করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দালাল বলেন, ‘ছেলেদের চাহিদা মেটানো খুব মুশকিল। কারণ তারা যেমন নীল চোখের মেয়ে চায় তেমনি আবার সবুজ চোখের অধিকারী মেয়েও চায়। তাদের যতই কম বয়েসী মেয়ের সন্ধান দেয়া হোক না কেন তারা আরও কম বয়সী মেয়ের সন্ধান করেন। অনেকগুলো দিক বনিবনা হলেই তবে তারা সিরীয় শরণার্থী মেয়েটিকে বিয়ে করতে চায়। প্রতিদিনই অনেক ফোন আসে আমার কাছে নানান বয়সী মেয়ের সন্ধান জানতে চেয়ে। আমার তৎপরতার কারণে যদি কোনো সিরীয় নারীর এবং তার পরিবারের ভাগ্য বদলে যায় তখন খুব ভালো লাগে।’ 
তবে ডিমা নামের আরেক দালাল জানান, ‘আপনার মেয়েকে যদি ছেলের পছন্দ হয় তাহলে সে দ্রুত বিয়ে করতে চাইবে। তখন আপনার মেয়েকে ছেলের কাছে পাঠাতে হবে। এসময় মেয়েকে কিছু ভালো পোশাক আর প্রসাধন দিয়ে সাজানো হয়। মেয়েকে নিয়ে চলে যাওয়ার পর ছেলেপক্ষ একটা নির্দিষ্ট সময় মেয়ের পরিবারকে অর্থ প্রেরণ করে। আর এক্ষেত্রে ছেলের বয়স ৪০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে হয়ে থাকে।’
একটা সময় ছিল যখন সিরীয় কোনো নারীকে বিয়ের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হতো ভিনদেশি কোনো পুরুষকে। কিন্তু যুদ্ধ আর সহিংসতা কেড়ে নিয়েছে সিরীয় নারীর সেই অহংকার আর কোমলতা। আজ সিরীয় নারীদের শুধুই শরণার্থী আর পণ্যের মানদণ্ডে মাপা হয়।

শনিবার, ১৪ জুন, ২০১৪

বাবা কতদিন...কত রাত দেখিনা তোমায়

বাবা কতদিন কতদিন দেখিনা তোমায়,/ কেউ বলেনা তোমার মত কোথায় খোকা ওরে বুকে আয়/
বাবা কতদিন কতদিন দেখিনা তোমায়।

ব্যাণ্ড শিল্পী জেমসের এই গাওয়া গানটি শোনার পর সম্ভবত পৃথিবীর কোন সন্তান নেই যে তার বাবার কথা মনে পড়েনা বা বাবার জন্য মনটা একটু হলেও কেদে ওঠেনা। এটাই সম্ভবত আবেগ। ভালবাসার আবেগ। রক্তের টান। দিন দিন আমাদের নগর জীবনের যান্ত্রিকতায় হয়তো অনেক সময় সেই আবেগ চাপা পড়ে যায়। পার্থিব চাওয়া পাওয়ার কারণে হয়তো বাবা ছেলের মাঝে তৈরী হয় একধরণের অদৃশ্য দেয়াল। বাহ্যিক সামাজিক দৃষ্টিতে যতই দেয়াল গড়ে উঠুক সন্তানের জন্য বাবার ভালবাসায় কিন্তু কোন খুত তৈরী হয়না। যেটা হয় সেটা অতি সামান্য সময়ের জন্য। হয়তো নিজেদের ব্যর্থতাগুলো ঢাকবার একটা মিথ্যা প্রয়াস। সন্তানের জন্য বাবার, বাবার প্রতি সন্তানের ভালবাসার ঘাটতি হয়না কখনোই। এই ভালবাসা অটুট থাকে চিরকাল। জাগতিক চোখ দুইটা হয়তো জলে না ভিজলেও অন্তচক্ষুতে হৃদয়ের রক্তক্ষরণ চলে সব সময়। একটু গভীর ভাবে চিন্তা করলেই সেটা ধরা পরে। এটাই বাবার প্রতি সন্তানের বা সন্তানের প্রতি বাবার ভালবাসা। এই ভালবাসা ঐশি । খোদার দেওয়া স্পেশাল মানবিক গুণ।

ভাষা ভেদে শব্দ বদলায়। স্থান ভেদে বদলায় উচ্চারণও। তবে বদলায় না রক্তের টান। জার্মানিতে যিনি ‘ফ্যাট্যা’, বাংলায় তিনি ‘বাবা’। ইংরেজ সন্তান যতটা আপ্লুত হয়ে ‘ফাদার বা ড্যাড’ ডাকে, ভারতীয়দের ‘পিতাজি’ নিশ্চয় একই ব্যঞ্জনা তৈরি করে।

বাবার প্রতি সন্তানের সেই চিরন্তন ভালোবাসার প্রকাশ প্রতিদিনই ঘটে। তার পরও পৃথিবীর মানুষ বছরের একটা দিনকে বাবার জন্য রেখে দিতে চায়। যেমনটা মায়ের জন্য করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাবা দিবসের প্রচলন। আজ বছর ঘুরে সেই রোববার, বিশ্ব বাবা দিবস।

বিভিন্ন  দেশে জুন মাসের তৃতীয় রোববারকে বাবা দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে।

সন্তানের কাছে বাবা বন্ধুর মতো। কারও বাবা পথপ্রদর্শক। অনেকেই বাবাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। অনেক দেশে কার্ডও উপহার দেওয়া হয়। যাদের বাবা বেঁচে নেই, তাঁরা হয়তো আকাশে তাকিয়ে অলক্ষ্যে বাবার স্মৃতি হাতড়ায়।

বাবা দিবসের প্রচলন বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই। ১৯১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পিতৃদিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণার বিল উত্থাপন করা হয়। ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাবা দিবসকে ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
আজকের এই বাবা দিবসে পৃথিবীর সকল বাবার প্রতি রইল শ্রদ্ধা আর ভালবাসা। আর যেসকল বাবা আজ আর পৃথিবীতে বর্তমান নেই তাদের আত্নার প্রতি রইল দোয়া। তাদের জন্য মহাল আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন সকল বাবাকে ক্ষমা করে দিয়ে তাদের সাথে সুন্দর আচরণ করেন।

‘রাব্বির হামহুমা কামা..রাব্বািইয়া নি..সগিরা’ হে আল্লাহ তুমি আমার পিতা-মাতার প্রতি যে ভাবে লালন পালন করেছে, তেমনি তুমিও তাদের প্রতি ঐরুপ সদয় আচরণ কর। আমিন।
ভাষা ভেদে শব্দ বদলায়। স্থান ভেদে বদলায় উচ্চারণও। তবে বদলায় না রক্তের টান। জার্মানিতে যিনি ‘ফ্যাট্যা’, এই বাংলায় তিনি ‘বাবা’। ইংরেজ সন্তান যতটা আপ্লুত হয়ে ‘ফাদার বা ড্যাড’ ডাকে, ভারতীয়দের ‘পিতাজি’ নিশ্চয় একই ব্যঞ্জনা তৈরি করে।
বাবার প্রতি সন্তানের সেই চিরন্তন ভালোবাসার প্রকাশ প্রতিদিনই ঘটে। তার পরও পৃথিবীর মানুষ বছরের একটা দিনকে বাবার জন্য রেখে দিতে চায়। যেমনটা মায়ের জন্য করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাবা দিবসের প্রচলন। আজ বছর ঘুরে সেই রোববার, বিশ্ব বাবা দিবস।
বিভিন্ন দেশে জুন মাসের তৃতীয় রোববারকে বাবা দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে।
সন্তানের কাছে বাবা বন্ধুর মতো। কারও বাবা পথপ্রদর্শক। অনেকেই বাবাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। অনেক দেশে কার্ডও উপহার দেওয়া হয়। যাদের বাবা বেঁচে নেই, তাঁরা হয়তো আকাশে তাকিয়ে অলক্ষ্যে বাবার স্মৃতি হাতড়ায়।
বাবা দিবসের প্রচলন বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই। ১৯১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পিতৃদিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণার বিল উত্থাপন করা হয়। ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাবা দিবসকে ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়৷
- See more at: http://nationnews24.com/index.php/nation/item/13352-%E0%A6%86%E0%A6%9C-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%B8#sthash.xF3iJvoR.dpuf

বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০১৪

আজ পবিত্র লাইলাতুল বরাত

ঢাকা, ১৩ জুন : আজ আরবী বছরের ১৪ শাবান তারিখ। বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায়ের নিকট মহিমান্বিত দিন। আরবিতে একে বলে পবিত্র লাইলাতুল বরাত বা শবে বরাত। বাংলায় যার অর্থ সৌভাগ্যের রজনী। মহান আল্লাহ তাআলা এ রাতে বান্দাদের জন্য তাঁর অশেষ রহমতের দরজা খুলে দেন। মহিমান্বিত এ রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বিগত জীবনের সব ভুল-ভ্রান্তি, পাপ-তাপের জন্য গভীর অনুশোচনা করে মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে কায়মনো বাক্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। রোজা রাখা ও নফল নামাজ, জিকির-আজকার, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে বিন¤্র প্রার্থনা করেন ভবিষ্যৎ জীবনে পাপ-পঙ্কিলতা পরিহার করে পরিশুদ্ধ জীবনযাপনের জন্য।

তাছাড়া বর্ষপঞ্জিতে শাবান মাস একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস। রাসূল (স:) এ মাসে বেশি-বেশি নফল রোজা রাখতেন। রমযানের প্রস্তুতির মাস হিসেবে তিনি এ মাসকে পালন করতেন। শবে বরাতের বরকত, ফযীলত ও মর্যাদা নিয়ে বেশকিছু হাদীসের বর্ণনা প্রচলিত আছে। একটি সহীহ হাদীসে বলা হয়েছে, “আল্লাহ তায়ালা মধ্য শাবানের রাতে তাঁর সৃষ্টির প্রতি দৃষ্টিপাত করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন। আটজন সাহাবীর সূত্রে বিভিন্ন সনদে এই হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।

এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, শবে বরাত ফযীলতময় এবং এ রাতে আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে ক্ষমা করে থাকেন। তবে ক্ষমা পাওয়ার শর্ত হলো শিরক ও বিদ্বেষ থেকে মুক্ত থাকা। এ দু'টি বিষয় থেকে যারা মুক্ত থাকবেন তারা কোন অতিরিক্ত আমল ছাড়াই এ রাতের বরকত ও ক্ষমা লাভ করবেন। কিন্তু শিরক ও বিদ্বেষ থেকে মুক্ত হতে না পারলে অন্য আমল দিয়ে ঐ রাতের বরকত ও ক্ষমা লাভ করা যাবে না। দু:খের বিষয় হলো, শবেবরাতে আমরা অনেক নফল আমল করলেও ঐ দু'টি শর্ত পূরণের চেষ্টা খুব কম মানুষই করে থাকি।

আমরা অবশ্যই পবিত্র শবেবরাতের বা নিসফে-শাবানের ফযীলত ও ক্ষমা প্রার্থনা করবো। তবে সাথে সাথে আমাদের চেষ্টা করতে হবে শিরক ও বিদ্বেষ থেকে মুক্ত থাকার। কারণ শবেবরাতের শিক্ষা এটাই। আর শবেবরাত উপলক্ষে যারা আলোকসজ্জা, আতসবাজি ও পটকাবাজি চর্চা করেন তারা খুবই ভুল কাজ করেন। কারণ এসব শবে বরাতের আদর্শ ও শিক্ষার পরিপন্থী কাজ। তাই এইসব কাজ থেকে দূরে থাকাই সমীচীন। আল্লাহ আমাদের সকলকে পবিএ এই রজনীর ফজিলত ও বরকত দান করুন। আমীন