ছবির মতোই সুন্দর ছিল আমার গ্রামটা...

বর্ষা মৌসুমে নৌকা ছাড়া চলাচলের কোন উপায় থাকতোনা। যেন মহসড়কের পাশে বিচ্ছিন্ন ছোটএকটা দ্বীপ।

সমস্যা যত বড়ই হোক, আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে

আমরা অবশ্যই পারব৷ সমস্যা যত বড়ই হোক না কেন, আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে, নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে অনুপ্রেরণা জোগায়৷ কিন্তু সমস্যাকে নিজের চোখে না দেখলে শুধু আশা দিয়ে সমস্যা সমাধান করা যায় না৷

ঘুরে আসুন নারায়ণগঞ্জের সব দর্শনীয় স্থানে

অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর আমাদের বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি জেলায়ই রয়েছে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। যা আমাদের দেশকে করেছে আরো সমৃদ্ধ। শত বছর ধরে লাখো পর্যটককে করেছে আকৃষ্ট।

মানবসেবাই সর্বোত্তম ধর্ম: ফাদার তেরেসা

অসহায়, দুস্থ মানুষের সহায়তাই তার ধ্যান-জ্ঞান।সহিংসতার বিপরীতে তিনি অসহায়ের ত্রানকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন।তিনি পাকিস্তানের আবদুল সাত্তার ইদি।অসম্ভব মানবসেবার কারনে ৮৪ বছর বয়সী এই ব্যক্তি তার দেশে ফাদার তেরেসা নামেই বেশি পরিচিত।

‘মানসিক প্রশান্তির জন্য সাইকেল’

যাত্রা পথে পরিবহন নিয়ে দুশ্চিন্তা আর ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে বিকল্প হলো একটা বাই সাইকেল। তাছাড়া ইদানিং স্বাস্থ্যটার দিকেও মনে হচ্ছে একটু যত্ন নেয়া দরকার।

রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৭

মাংস ব্যবসায়ীদের সমস্যার সমাধান হবে, ভোক্তাসমস্যার সমাধান হবেকি ?

মাংস ব্যবসায়ী সমিতির দাবি দাওয়া মেনে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। ঢাকার দুই মেয়রের সঙ্গে কথা বলে আগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান করা হবে। মাংশ ব্যাবসায়ীদের জন্য খবরটি অত্যান্ত আশাব্যাঞ্জক। কারন অনেকদিন ধরেই তারা তাদের দাবি আদায়ে সোচ্চার রয়েছে। ঘাটে ঘাটে চাদাবাজি, আর ইজারাদারদের অব্যবস্থাপনাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এই খাতটি। নির্দিষ্ট নীতিমালা হলে হয়তো তারা স্বস্তি পাবে। কিন্তু একজন সাধারণ ভোক্তা হিসেবে আমরাকি শংকামুক্ত হতে পারছি ?? আমরাকি স্বস্তি পাবো??

যে দিন থেকে বুঝতে শিখেছি, সেদিন থেকে দেখে আসছি কিভাবে বেড়ে চলেছে মাংশের দাম। সেই ৬০ টাকা থেকে শুরু..এখন ৫শ থেকে সাড়ে ৫শ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। অথচ বাজারে সব ধরনের নিত্যপন্যের দামই বাড়ে আবার ক্ষনে ক্ষনে কমেও। সবকিছু মিলিয়ে দাম বাড়া-কমার একটা ব্যালান্সের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু বিপরীতে বাজারে মাংশের দাম কমেনি কখনো।

কিছুদিন আগেও গত ১৩ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছয় দিনের কর্মবিরতি পালন করেছিলেন মাংস ব্যবসায়ীরা। তখন তারা জানিয়েছিল, তাদের দাবি দাওয়া বন্ধ হলে মাংশের দাম অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু সেদিনের কয়দিনের ধর্মঘটের পরে বাজারে মাংশের দাম আরো বেড়ে গেল। হয়তোবা তাদের দাবি মেনে নেয়া হয়নি।

ওই ঘটনার আড়াই মাস পর রোববার আবারও ব্যাবসায়ীরা সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব শামীম আহমেদ জানিয়েছেনসমস্যার সমাধান হলে গরুর মাংস ৩০০ টাকা কেজি আর ছাগলের মাংস ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা যাবে।
আমরা তার এই আশ্বাসে আশ্বস্ত হতে চাই। কিন্তু মন্ত্রনালয়ে মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রীর সংঙ্গে ব্যাবসায়ীদের যে বৈঠক হয়েছে, তাতেকি ভোক্তা সাধারনের স্বার্থ নিয়ে আলোচনা হয়েছে ?? নাকি আগামী রমজানে ব্যাবসায়ীদের কর্ম বিরতিতে যাওয়ার হুমকিতে ভীত হয়েই থাকবো।

তাই মাননীয়মন্ত্রী মহোদয়, মেয়র দ্বয় তাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে ব্যাবসায়ীদের সাথে বৈঠকে ভোক্তাসাধারনের স্বার্থও যেন অক্ষুন্ন থাকে।   

রবিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৭

হাওরবাসীর দুর্দিন: জনসাধারনের ত্রাণ তৎপরতা কই?

প্রকৃতির বৈরিতায় নিঃস্ব হাওরের লাখো মানুষ। বৃষ্টির পানি আর উজানের ঢলে তলিয়ে গেছে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ৭ জেলার ২৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা। নষ্ট হয়েছে কৃষকের প্রায় পেকে যাওয়া একমাত্র ফসল ধান। প্রকৃতির এই আচরণে শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে নিঃস্ব হাওরাঞ্চলের প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ।



শুধু একমাত্র ফসল ধানই নয়, বিষাক্ত পানিতে মারা পড়ছে টনের পর টন মাছ। মারা যাচ্ছে হাস মুরগীর মতো গৃহপালিত পশুও। ফলে হাওরের এইসব কৃষিজীবি মানুষদের চোখেমুখে এখন শুধু অন্ধকার। 




একটি বেসরকারি টিভি প্রতিবেদনের দেখলাম, একজন বয়োবৃদ্ধ কৃষক  তার দু:খ কষ্টের কথা বলতে গিয়ে বলছেন, ‘ মনে কয়, পানিতে ঝাঁপ দিয়া মইরা যাই, পোলাপাইন লইয়্যা এখন কেমন চলমু, কী খাওয়ামু’  তার এমন দুর্দশার কথাশুনে  মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো। 



কৃষি নির্ভর আমাদের এই দেশে,দুর্ভিক্ষের  যে পূর্বাভাস দেখা যাচ্ছে, তা থেকে হয়তো বাঁচতে পারবোনা আমরাও। কারন সব সময়ই দেখে আসছি, কারনে অকারনে সময়ে অসময়ে কোন কারন ছাড়াই বাড়ে দ্রব্যমুল্য। আর ধান বা চালতো আমাদের নিত্য আহার। তাই ধানের সবচেয়ে বড় যোগান আসে যে এই হাওরাঞ্চল থেকে। মৌসুমের শেষ দিকে এসে প্রকৃতির এমন আকস্মমিকতায় যে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে সাড়ে তিন লাখ মানুষের সে বিপর্যয় যে কিছু দিনের মধ্যেই ১৬ কোটি মানুষকেও গ্রাস করতে পারে, সে আশংকা অন্যায্য নয়।



এরই মধ্যে একটি আশা জাগানিয়া খবর পেলাম তা হলো,হাওরবাসীর এই দুর্দিনে এগিয়ে গেছে আমাদের সরকার। মাননীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রী জানিয়েছেন, হাওরাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল ও ৫’শ টাকা অর্থ সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এবং আগামী মৌসুম পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। জাতীয় এ দুর্যোগে সরকারের এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসীয়।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সরকারের এই ত্রাণ কতটা পর্যাপ্ত। যারা ধারকর্জ করে ধান চাষ করেছিলেন,তাদের কী হবে? 



তবে,সরকারের একার পক্ষেত আর এত বৃহৎ জনগোষ্ঠির সব চাহিদা মেটানো কখনোই সম্ভব নয়।তবে আমাদের সবার অংশগ্রহনে ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যদি তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসা যায় তাহলে হয়তো সেই দুর্দশা কিছুটা হলেও লাঘব করা সম্ভব হবে। 



এছাড়া অতীতে, শীত  মৌসুমে বা বড় দূর্যোগের সময়ও আমরা দেখতে পেয়েছি, আমাদের শহুরে মানুষদের অনেকেই যার যার সাধ্যমতো ত্রাণ নিয়ে এগিয়ে যায়, কেউ কেউ হয়তো লোক দেখানো সহায়তা নিয়েও যায়। কিন্তু এবারের এই জাতীয় দূর্যোগে সেই চিত্র অনেকটাই কমই দেখতে পাচ্ছি।



তাই সবার প্রতি আহ্বান জানাবো, হাওরবাসীর প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে এখনই আমাদের উচিৎ সাধ্যানুযায়ী সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া।  প্রয়োজনে শীতবস্ত্র সংগ্রহের মতো যৌথভাবে  ফান্ড সংগ্রহ করে, খাদ্য সামগ্রী ও অন্যান্য সহযোগিতা দুর্গতদের মাঝে পৌঁছে দেয়া যেতে পারে।



আর  যেসব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হারওরের কৃষকদের মাঝে বীজ, সার, কীটনাশক বিক্রি করে, তাদের প্রতিও আহ্বান জানাবো ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পূর্বেকার ঋণ মওকুফ করে, আগামী মৌসুমে ফ্রি-তে বীজ সার বিতরন করবেন।


- আকতার হাবিব
সাংবাদিক, রেডিও ধ্বনি,ঢাকা।

বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৭

এলেন বাড়ির বৈঠক কোন সমাধান নয়, চক্রান্তেরই অংশ

কার স্বার্থে চালু হলো সিটিং সার্ভিস ;
গত কয়দিন ধরে দেশে গণপরিবহন নিয়ে নাটক না, মহানাটকের মঞ্চায়ন চলছে। সিটিং নামের চিটিং বন্ধ হলো, কিন্তু পরিবহন মালিক শ্রমিকদের গুন্ডামি বন্ধ হলোনা। সিটিং বন্ধ করে গাদাগাদি করে লোক তুলল, কিন্তু ভাড়া কমালোনা, বরং উল্টো মাথার উপরের ফ্যানটা পর্যন্ত খুলে নিল বদমায়েশগুলো। তাদের রুটি রুজির একমাত্র নিয়ামক এই যাত্রীদের সাথে দুর্ব্যাবহার করতে এতটুকু বিবেকে বাধলোনা। যাদের বিবেকে বাঁধা দিয়েছে তারা একডিগ্রী এগিয়ে বাস চলাচলই বন্ধ রাখলো। বাহ..কী সুন্দর নিরব প্রতিবাদ তাদের। 




গত ৪/৫ দিনে মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগে অনেকেই সিটিং সার্ভিস পুনরায় ফেরা নিয়ে মায়া কান্না দেখিয়েছেন। অবশ্য যারা এমনটি করছে চাহিদার জন্য না, বরং এটা তাদের অধৈর্যের বহিপ্রকাশ। 

যাই হোক- গতকয়েকদিনেরর মহা নাটকের আপাতত একটা রফা হয়েছে, বুধবারের এলেনবাড়ির বৈঠকে। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ১৫ দিনের  জন্য স্থগিত করা হয়েছে। মানে পিছু হটেছে সরকার। দোর্দণ্ড প্রতাপ দেখিয়েছে পরিবহন মালিকরা। তারা ভাড়া কমায়নি, সেবার মান বাড়ায়নি, জনগনের সাথে তাদের আচরন বদলায়নি উল্টো এনবিআর থেকে ট্যাক্স কমানোর ঘোষনা নিয়ে নিছেন। সিটিং চালুর বৈধতা নিয়ে নিছেন। আপাত দৃষ্টিতে এই বৈঠকে তাদেরই জয় হয়েছে, পরাজয় ঘটেছে সাধারন যাত্রী ও সরকারের। 

তাহলে এখন চোখ রাখা যাক গতকালের সেই বৈঠকে- এটাকে আমি বৈঠক বলবোনা। বলবো ষড়যন্ত্রের এক গোপন শলাপরামর্শ হয়েছে এলেন বাড়িতে। কারন জনগনের ভোগান্তি হলেও জনগনকে সম্পৃক্ত করা হয়নি ওই বৈঠকে। ছিলনা সরকার পক্ষের কর্তা ব্যাক্তিরাও। অথবা নিয়ম অনুযায়ি যাত্রী সাধারণকে নিয়ে গণশুনানীর আয়োজন করা যেত। 
অথচ বৈঠক করেছে ঘুষখোর আর দুর্ণীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত বিআরটিএর কতিপয় কর্মকর্তারা এবং এই নাটকের মুল খলনায়ক বাস মালিকরা। তাহলে কী আলোচনা হতে পারে সেই বৈঠকে?? তারা নিজেদের স্বার্থেই আলোচনায় বসেছিল সেখানে।


রাজধানীর ফার্মগেটের এলেনবাড়িতে বিআরটি এর কার্যালয়
আমরা ধারনা করতে পারি-(স্রেফ ধারনা) বৈঠকে বাস মালিকরা বিআরটিএর কর্মকর্তাদের শাষিয়েছে, মাসে মাসে এতটাকা ঘুষ দিচ্ছি সেই টাকা কোত্থেকে আসবে?? ঘুষখোর কর্মকর্তারা তাদের ধমকে চুপসে গেছে...অথবা কর্মকর্তারা বলেছে তোমরা মাসে মাসে যে ঘুষ দেও তাতে আর পোষাচ্ছেনা, বাজারে জিনিস পত্রের ম্যালা দাম বাড়ছে। বাস মালিকরাও তাদের উৎকোচের পরিমান বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। আর অমনি গনেশ উল্টে গেছে।`

ঘটনার একটা যৌক্তিক ও গ্রহনযোগ্য একটা সমাধান দিতে  এদের বাইরে ২ জনকে রাখা হলো তাদের একজন নিসচা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, উনি অবশ্য সরকারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসার প্রস্তাব করেছিল। তার যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছেন অতীতে সরকার অনেক উদ্যোগ নিয়ে মাঝপথে আটকে গেছে। পরে আর সেই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়নি। তাই এবার পিছু হটা উচিত হবে না। কিন্তু তার আপত্তি হাওয়ায় মিলে গেছে। 

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান। শুনেছি তারই মস্তিস্ক থেকে নাকি সমাধানের এই মহান থিওরী প্রসব হয়েছে। যদিও তার  নৈতিকতা নিয়ে আমার ঘোর আপত্তি অাছে। উনি টকশোতে যখন কথা বলে তখন মুগ্ধ হয়ে শুনি। কিন্তু বাজারে এ-ও রটনা আছে যে কোন বিষয় স্টাবলিশ করতে তাকে নাকি কন্টাক করে নিয়ে যাওয়া হয় যুক্তি তর্ক দিয়ে বিষয়টি প্রতিষ্ঠা করার জন্য। এবং তিনি এই লাইনে অনন্য। আর গতকালও তিনি ঠিক কার স্বার্থে কথা বলতে সেই মিটিংএ হাজির ছিলেন তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। 
একটি জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলো থেকেই কোট করছি গতকাল বৈঠকে তার ভূমিকা, ‌‌সিটিং সার্ভিস বন্ধের অভিযান ১৫ দিন স্থগিত রাখা এবং এটি আইনি কাঠামোতে এনে চালু করার পরামর্শটি সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খানের কাছ থেকে এসেছে বলে বৈঠক সূত্র জানায়। একপর্যায়ে বিআরটিএর চেয়ারম্যান বৈঠক থেকে উঠে নিজ কক্ষে ঘুরে আসেন। এরপরই সাংবাদিকদের ভেতরে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়। 
এ সময় তিনি বলেন, ‘একটা উদ্দেশ্য নিয়েই মালিকেরা সিটিং সার্ভিস বন্ধ করেছিলেন। তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাঁদের সে উদ্যোগে সহায়তা করেছি। তবে সিটিং সার্ভিস বন্ধ হওয়ার পর নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী যাত্রীদের অসুবিধার কথা বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসে। এ জন্যই সিটিং সার্ভিস বন্ধের সিদ্ধান্ত ১৫ দিন স্থগিত করা হয়েছে।’`
আমার বক্তব্য হলো, ওই বৈঠকে বাস কর্তৃপক্ষরা নিজেদের স্বার্থে কথা বলেছে। দেশ বা জনগনের স্বার্থ নয়। 
কালকে কেন, কেউ জোড়ালো ভাবে সরকারের সিদ্ধান্ত অমান্যকারি বাস মালিকদের কঠোর শাস্তির দাবি জানালোনা??  আইনে আছে কেউ কারন ছাড়া বাস চলাচল বন্ধ রাখলে তাদের রুট পারমিট বাতিল করা হবে। সেই আইনের প্রয়োগ কেউ দেখালোনা কেন?  জনগনের প্রতিনিধি আমাদের দুই সাহসী মেয়র মহোদয়দের রাখা হলোনা কেন ওই বৈঠকে, মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ছিলনা কেন ঐ বৈঠকে। তাহলে দেখতাম বাস মালিকদের কতবড় বুকের পাটা ছিল গুন্ডামী করার। 
অতীতের কর্মকান্ডের জন্য জনগনের প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকার দুই মেয়র এবং মাননীয় সেতু মন্ত্রী সাহেবের প্রতি আমাদের যথেষ্ট আস্থা রয়েছে। এবং আমাদের বিশ্বাস তাদের সিদ্ধান্তেও জনগনের আশা আকাংখার প্রতিফলন ঘটতো।
রাজধানীর ফার্মগেটের এলেনবাড়িতে বিআরটি এর কার্যালয়
যাই হোক এই কয়দিনের অবর্নীয় দুর্ভোগ আর অভিযোগের মুল বিষয় ছিল দুই টা। ১. সিটিং বন্ধ হলেও ভাড়া কমেনি। ২. পর্যাপ্ত বাস নামেনি।
অথচ এই দুই অভিযোগের কোন সুরাহা না করে বাস মালিকদের অনৈতিক দাবির কাছেই হার মেনেছে মেরুদন্ডহীন সরকারি কর্মকর্তারা। তাই আমার বিশ্বাস বুধবার বিকেলে এলেন বাড়ির ওই বৈঠকটি কোন বৈঠক ছিলনা, ছিল জনগনকে ঠকানোর এক গোপন ষড়যন্ত্র।

- আকতার হাবিব, সাংবাদিক, ঢাকা।
 - ২০ এপ্রিল সকাল ৬.৩০ 

রবিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৭

বন্ধ হলো সিটিং সার্ভিস: ভোগান্তি কমবে তো নগরবাসীর ?

বিআরটিএ এর ঘোষণা অনুযায়ী আজ থেকে বন্ধ হয়েছে সিটিং সার্ভিস। এমন সিদ্ধান্তে আপাত হাফ ছেড়ে বেঁচেছে নগরবাসী। কিন্তু দুশ্চিন্তা যেন পিছু ছাড়ছেনা কারো। কারন আপাতদৃষ্টিতে কিছুটা সুবিধা হলেও ভোগান্তি কমেনি এতটুকুও। নতুন এই নিয়মে বাসকর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায়ে একতরফা রাহাজানি কিছুটা কমলেও ভাড়া কমেনি অনেক বাসেই। বরং উল্টো গাদাগাদি করে যাত্রী উঠানো ও অযথা সময়ক্ষেপনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে প্রবল।

গণপরিবহনের এই নৈরাজ্যের বিষয়টি উঠে এসেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরেও। ফলে্ এই সিদ্ধান্তের পক্ষে বিপক্ষে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সিদ্ধান্তের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে অনেকেই বিশ্লেষন করছেন।

দৈনিক প্রথম আলোর এক সংবাদের মাধ্যমে জানা যায়, মৃন্ময় মিন্টু নামের এক যাত্রী অভিযোগ করেন, মিরপুর ১ থেকে শাহবাগের বাসভাড়া তালিকা অনুযায়ী ১৬ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু দিশারী পরিবহন এখনো ২৫ টাকা নিচ্ছে। এম আর আবির নামে এক যাত্রী অভিযোগ করেছেন, মিরপুর-১ থেকে হেমায়েতপুরের ভাড়া ২০ টাকা। কিন্তু নিচ্ছে ৩৫ টাকা। তা-ও যাত্রীদের দাঁড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ভোগান্তির আরো চিত্র ফুটে উঠেছে, জাগো নিউজ২৪ এর একটি প্রতিবেদনে, 

সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য যে। বাসের কোনো টিকেট সিস্টেম নাই। যাত্রীদের সাথে অনেক সময় চরম পর্যায়ের খারাপ ব্যবহার করা হয়। অনেকে জানেনা গন্তব্য স্থলের ভাড়া কত। যার থেকে পারে ইচ্ছা মতো ভাড়া নেওয়া হয়। বাস এক জায়গায় অনেক সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। প্রতিবাদ করতে গেলে খারাপ ব্যবহারের শিকার হতে হয়।  আরেকটা খারাপ দিক হলো কার আগে কে যেতে পারে। চলন্ত অবস্থায় যাত্রী উঠতে, নামাতে গিয়ে অনেকে সময় এক্সিডেন্টের ঘটনা ও ঘটে। বাস গুলো কে নির্দিষ্ট স্টপিস মেইনটেইন করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করা হলো।


প্রতিফলন যাই হোক, বাস কর্তৃপক্ষের একতরফা নৈরাজ্য ঠেকাতে এটাযে একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ তাতে কোন সন্দেহ নেই। তবে এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় যে ভোগান্তির সৃষ্টি হবে, সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কতটা প্রস্তুত সেটাই এখন ভাবার বিষয়। 

যদিও রাজধানীতে সিদ্ধান্ত কার্যকরে ৫ টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে কিন্তু এটা কতদিন চলবে তা নিয়েও সন্দিহান সাধারন মানুষ।
একজন সাধারন ও সচেতন নাগরিক হিসেবে যোগাযোগ সরকার, বিআরটিএ, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও সিটি মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানাবো- নগরীতে সিটিং সার্ভিস বন্ধের যে যুগান্তকারি পদক্ষেপ নিয়েছেন, তার সফল বাস্তবায়নের লক্ষে আপনাদের আরো কার্যকরি ভুমিকা দরকার।

সাধারন যাত্রীকুলের ভোগান্তিহীন বাসযাত্রা নিশ্চিত করতে ওভার লোডিং বন্ধ ও সরকারি ভাড়া তালিকা কার্যকর করতে কর্তৃপক্ষ আরো উদ্যোগী হবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি।


-আকতার হাবিব, (16.04.17/ 18:21)

শনিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৭

প্রসঙ্গ ফেসবুক: যখন পড়বেনা মোড় পায়ের চিহ্ন এই বাটে...

 কিছুক্ষন আগে, অনেক চেষ্টা করে আমার পুরনো ফেসবুক আইডিতে ঢুকলাম। ১০-১২ বার চেষ্টা করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের নানা শর্ত মেনে আইডিটা উদ্ধার করতে সমর্থ হলাম। ২০০৯ সালে সাইবার ক্যাফেতেতে গিয়ে ২৫ টাকা খরচ করে খোলা এই আইডিটি উদ্ধার করতে পেরে বরই উচ্ছসিত হয়েছি। টানা ৫ বছর ব্যাবহার করা আমার এই একাউন্টে ঢুকতেই কেমন নস্টালজিয়ায় পেয়ে বসলো। যেন পুরনো দিনের এ্যালবাম খুলে বসেছি।  একেকটি ছবি যেন একেকটি ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে। পুরনো কিছু বন্ধু, চেনা মানুষের ছবি ভেসে আসলো...মুহুর্তেই তাদের একাউন্টগুলোতে ঘুরে পরিবর্তনগুলো পরখ করলাম। ঘেটেঘুটে দেখলাম চ্যাংড়া ছেলেগুলো কিভাবে ব্যাটা ছাওয়ালে রূপান্তরিত হলো, সুন্দরী মেয়ে গুলো কীভাবে দিনবদলের হাওয়ায় ফুলে ফেপে ভাবি বা আন্টির রং ধারন করেছে।
এই একাউন্টে আমার ফ্রেন্ডের সংখ্যা খুবই কম সাড়ে ৩ শ'র কাছাকাছি। কিন্তু তাদের ৮০ শতাংশি রিয়েল লাইফ ফ্রেন্ড। অপরিচিত কাউকে নেয়া হয়না তেমন।  নতুন আইডিতে তাদের অনেকের সঙ্গেই যুক্ত হতে পারলেও অনেকেই রয়েগেঁছে আড়ালে। কেউকেউ বিদেশ বিভূঁইয়ে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।।

সবকিছু মিলিয় ৫ মিনিটের জার্নি ঘন্টা ছাড়ালো কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হলোনা।।
সবচে বেশি যে বিষয়টি মনে দাগ কেটে গেলো..তা হলো, মেসেঞ্জার বক্স।।  সেটা খুলতেই যেন খবরের ডালা খুলে দিল ফোসবুক। কুশলাদি বিনিময় করে কত কত আপনজন মেসেজ করে রেখেছে।
কেউ জরুরি অতি জরুরি খবর দিতে বা নিতে চেয়েছে, কেউবা শ্রেফ খোজ খবর জানতে চেয়েছে। নাম্বার চেয়েছে অনেকেই।
সবচে মজার বিষয় হলো, গেল সপ্তাহখানেক অাগে ২৬তম জন্মদিন গেলো।। আর এই আইডিতে ঢুকে দেখি...২০১৪/১৫ সালের পাঠানো জন্মদিনের শুভেচ্ছার জবাব দেয়া হয়নি। এমনকি দেখতেও পাইনি আমি...কেউ কেউ লিখেছে জরুরি ভিত্তিতে যোগাযোগ করার কথা।.....।


পুরান আমার এই প্রোফাইল চেক করে মনে হলো..কোন মৃত মানুষের ফেসবুকে ঢুকেছি আমি। যেখানে হঠাৎ করেই ব্যাবহারকারির প্রস্থানের কারনে থমকে গেছে সব খবর। বন্ধ রয়েছে সব আপডেট। ভাবতেই মনটা বিষিয়ে উঠল। আসলেইকি মরে ছিলাম আমি এই কয় বছর?
কিছুদিন আগে কোন কোন অনলাইন পত্রিকায় নিউজ দেখেছিলাম, এপর্যন্ত কোটি খানেক ফেসবুক ইউজারের মৃত্যু হয়েছে। নিউজের সুত্র অবশ্য মৃতমানুষদের কোন জরিপনা, বরং ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ধারনা প্রসুত একটি সমীক্ষা দিয়েছে। কারন কেউ মারা গেলেত আর স্ট্যাটাস দিয়ে বা ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে মেসেজ দিয়ে জানিয়ে যেতে পারেনা..যে জনাব, জাকারবার্গ আমি মরে যাচ্ছি।  তাই আমার একাউন্টটি স্থগিম করুন। সম্ভবত, যেসব ফেসবুক ইউজার দীর্ঘ দিন তার আইডিতে ঢোকেনা, তাদেরকেই মৃত সাব্যস্ত করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
তাহলেকি আমাকেও তারা মৃতদের তালিকায় ফেলেছিল??  এই প্রশ্নটিই বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে মনে।

আরও খারাপ লাগার যে বিষয়টি লক্ষ করলাম, তা হলো- এই কয় বছরে সত্যি সত্যি কিছু আইডির ফেসবুকিয় মৃত্যু ঘটেছে। ( মানে ডিএ্যাকটিভেট হয়েছে বা ব্লক করে দেয়া হয়েছে।) অনেকেই আবার সামাজিক নিরাপত্তার স্বার্থে নাম বদলে ফেলেছেন, যার কারনে গভীর অনুসন্ধান ছাড়া তাদের খুজে বের করা মুশকিল।

যাইহোক, আজকের এই উপলব্ধির মুল কথা হলো, এই যে এখন সারাদিন ফেসবুকে লগইন থাকি। এত এত বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ দরকারি আলাপ..এত বিপ্লবী স্ট্যাটাস...দিন শেষে সত্যিকি এগুলোর মানে আছে? এত জরুরি আপডেটকি কখনোই আমাদের অগ্রগামি করেছে? নাকি সময়ের অতল গভীরেই হারিয়ে যাবে সব রাগ অনুরাগ। মিথ্যা প্রমানিত হবে সব আবেগ অনুভুতি।

- আকতার হাবিব
১৬.০৪.১৭ ইং (রাত ০২.০৩ মিনিট)