ছবির মতোই সুন্দর ছিল আমার গ্রামটা...

বর্ষা মৌসুমে নৌকা ছাড়া চলাচলের কোন উপায় থাকতোনা। যেন মহসড়কের পাশে বিচ্ছিন্ন ছোটএকটা দ্বীপ।

সমস্যা যত বড়ই হোক, আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে

আমরা অবশ্যই পারব৷ সমস্যা যত বড়ই হোক না কেন, আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে, নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে অনুপ্রেরণা জোগায়৷ কিন্তু সমস্যাকে নিজের চোখে না দেখলে শুধু আশা দিয়ে সমস্যা সমাধান করা যায় না৷

ঘুরে আসুন নারায়ণগঞ্জের সব দর্শনীয় স্থানে

অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর আমাদের বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি জেলায়ই রয়েছে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। যা আমাদের দেশকে করেছে আরো সমৃদ্ধ। শত বছর ধরে লাখো পর্যটককে করেছে আকৃষ্ট।

মানবসেবাই সর্বোত্তম ধর্ম: ফাদার তেরেসা

অসহায়, দুস্থ মানুষের সহায়তাই তার ধ্যান-জ্ঞান।সহিংসতার বিপরীতে তিনি অসহায়ের ত্রানকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন।তিনি পাকিস্তানের আবদুল সাত্তার ইদি।অসম্ভব মানবসেবার কারনে ৮৪ বছর বয়সী এই ব্যক্তি তার দেশে ফাদার তেরেসা নামেই বেশি পরিচিত।

‘মানসিক প্রশান্তির জন্য সাইকেল’

যাত্রা পথে পরিবহন নিয়ে দুশ্চিন্তা আর ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে বিকল্প হলো একটা বাই সাইকেল। তাছাড়া ইদানিং স্বাস্থ্যটার দিকেও মনে হচ্ছে একটু যত্ন নেয়া দরকার।

বৃহস্পতিবার, ২৬ জুলাই, ২০১৮

স্বামী হিসেবে সাংবাদিকরা সবচেয়ে পঁচা


আমাদের দেশে একটা কথা বেশ প্রচলিত আছে ‘সাংবাদিকের কপালে গরম বউ আর ঠান্ডা ভাত’ অর্থাৎ পেশাগত কারনেই বেশিরভাগ সময় অনেক রাত করে ঘরে ফিরতে হয় সাংবাদিকতার মতো মহান পেশায় নিয়োজিত কর্মীদের। তাই অত রাতে হাড়ির ভাত ঠান্ডা হয়ে গেলেও বউয়ের মেজাজ ঠিকই গরম থাকে। পেশায় যেহেতু মহান সেহেতু ঠান্ডা ভাত খেয়েই গরম মেজাজ হজম করতে হয় রোজ। 

সম্প্রতি অনলাইনে ভেসে বেড়াচ্ছে একটি স্যাটায়ার ধর্মী আর্টিক্যাল তা হলো ‘প্রেমিক হিসেবে নাকি সাংবাদিকরাই সেরা।’ প্র্যাকটিক্যালি ওই লেখার সাথে আমার কোন দ্বিমত নেই। তবে এর পরের স্টেপে যত গণ্ডগোল। 

লেখকের নিজস্ব গবেষণা ও জরিপ বলছে, প্রেমিক হিসেবে সেরা হলেও স্বামী হিসেবে কিন্তু সাংবাদিকরা খুবই পঁচা। সাংবাদিক ও তাদের স্ত্রীদের উপর চালানো এক জরিপে দেখা গেছে ৯০ শতাংশেরই এই পেশার প্রতি রয়েছে চরম অসন্তোষ।

বিশেষ করে পেশাগত অনিশ্চয়তা, অর্থনৈতিক টানাপোরেন, হাউজ পলিটিক্স এবং হয়রানির কারনেই বেশিরভাগ সাংবাদিক পেশার প্রতি বিরক্ত। তবে নানা সংকটেও পেশার প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং দায়বোধ থেকেই এই পেশা ছেড়ে অন্যকোথাও যেতে চাননা ৮০ শতাংশ সাংবাদিক। বাকী ২০ ভাগ মনে করেন পেশা পরিবর্তনের মোক্ষম সুযোগ না থাকা, সরকারি চাকরির বষয় শেষ হওয়ার কারনে এ পেশায় রয়ে গেছেন তারা।

অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১০ কারনে সাংবাদিকদের প্রতি ক্ষুদ্ধ তাদের স্ত্রীরা।  

১. সাংবাদিকদের স্ত্রীদের প্রধাণতম অভিযোগটি হলো সময় না দেয়া। প্রায় ৭০ শতাংশ সাংবাদিকের স্ত্রীরাই মনে করেন তাদের স্বামীরা পর্যাপ্ত সময় দেন না পরিবারে। পেশাগত কাজ নিয়েই দিনের বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকেন তারা। বিশেষত চাকরীজীবি স্ত্রীরা সাংবাদিক স্বামীকে কাছে পান খুবই কম।

২. অর্থনৈতিক টানাপোরেন। সামান্য যে বেতন পান তা দিয়ে সংসারের নিয়মিত খরচ মেটাতেই হিমসিম খেতে হয় সাংবাদিকদের। তাছাড়া অনিয়মিত বেতন এবং পেশাগত অনিশ্চয়তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় থাকেন স্ত্রীরা। 
৩. ছুটির দিনেও কোথাও বেড়াতে যান না।অন্যপেশার লোকজন বিশেষ দিবসগুলোতে ছুটি পেলেও সাংবাদিকরা কোন ছুটি পাননা। এছাড়া সাধারন সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও নানা কারনে ব্যস্ত থাকেন তারা। পারিবারিক অনুষ্ঠান আয়োজনেও সহসা অংশ নিতে পারেননা এই বিশেষ পেশায় নিয়োজিতরা। 

৪. পেশাগত দায়বোধের দোহাই দিয়ে প্রায়ই নানা উটকো ঝামেলায় জড়িয়ে থাকেন সাংবাদিকরা। এ নিয়ে প্রায়ই উদ্বিগ্ন থাকতে হয় স্ত্রীদের ।
৫. পেশাগত কারনে সাংবাদিকরা জীবন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া। তাবৎ দুনিয়ার সমস্ত খবর তাদের ব্রেনের আগায় থাকলেও সংসারের খুটিনাটি ছোট বিষয়গুলোও  তাদের মাথায় থাকেনা। 

৬. বেশিরভাগ সাংবাদিকদের স্ত্রীরাই মনে করেন, স্ত্রীদের প্রয়োজন মাথায় না থাকলেও অন্যের সমস্যা ঠিকই নিজের মাথায় বয়ে বেড়ান সাংবাদিকরা। 
৭. অনেকেরই অভিযোগ, সাংবাদিকরা নাকি একটু বেশিই প্রশ্ন করেন। যেটা সবার পছন্দ নয়। 

৮. কারো কারো অভিযোগ সাংবাদিকদের নাকি আত্নসম্মান বোধ কম। কারন ভালো মন্দ, যে কোন শ্রেনী পেশা বা চরিত্রের লোকদের সাথেই তাদের সমান সম্পর্ক। 
৯. অনেকে মনে করেন, এই পেশার লোকজন জীবন যাপনে যথেষ্ট ডিসিপ্লিন মেনে চলেন না। খাওয়া-দাওয়াসহ প্রাত্যাহিক কাজে চরম অনিয়ম করেন।ফলে শেষ জীবনে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয় পরিবারের অন্য সদস্যদের। 

১০.  অনেকেই মনে করেন, অযাচিত মন্তব্য বেশি করেন সাংবাদিকরা। জীবন জগতের সব কিছু নিয়েই তারা বিশেষজ্ঞ জ্ঞান জাহির করেন। যেই সাবজেক্ট নিজের সেটা নিয়ে যেমন কথা বলেন, তেমনি যে বিষয় আওতার বাইরে সে বিষয়েও পাণ্ডিত্য ফলাতে বেশ পটু সাংবাদিকরা। 

এসব কারনেই অনেক স্ত্রী’রাই মনে করেন প্রেমিক বা বন্ধু হিসেবে সাংবাদিকরা আস্থাভাজন হলেও স্বামী হিসেবে একদম বিপরীত। 

বি.দ্র: এই লেখাটি লেখকের অযাচিত পাণ্ডিত্য। বাস্তব বিষয়ে লেখকের কোন অভিজ্ঞতাই নেই। সবই গবেষণালব্ধ জ্ঞান। তাই লেখা থেকে কারও দু:খিত হওয়ার  বা কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর যুক্তিকতা নেই। 

বুধবার, ২৫ জুলাই, ২০১৮

‘মানসিক প্রশান্তির জন্য সাইকেল’


 অফিস শেষে ক্লান্ত শরীরে বের হলাম। গন্তব্য শাহবাগ। কিন্তু রাস্তায় বেরুতেই যেন চোখ কপালে..পুরা রাস্তায় গাড়িতে ঠাসা। তীব্র যানজটে গন্তব্যে যাওয়ার কোন গাড়ি নেই। উপায় না দেখে আড়াইশো টাকার বিনিময়ে রাইড শেয়ারিং অ্যাপের দ্বারস্ত হওয়া গেলো কিন্তু তীব্র যানজটে  সেই সার্ভিসেও ভরসা রাখা বৃথা। 

আবার কখনো কখনো কোথাও যাওয়ার জন্য তাড়াও থাকে। কিন্তু ঢাকার ট্রাফিকের কাছে হাসফাঁস করা ছাড়া যেন আর কিছুই করার নেই আমাদের। সকালেও একই রকম অস্বস্তি নিয়ে বাসা থেকে বের হতে হয়। হাতে যত সময় নিয়েই বের হোন না কেন সঠিক সময়ে অফিস পৌঁছার কোন গ্যারান্টি নাই। 

যাওয়া এবং আসার পথে আমাদের এই দুশ্চিন্তা আর ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে একটি বিকল্প পদ্ধতি মাথায় আসলো। সেটা হলো একটা বাই সাইকেল। তাছাড়া ইদানিং স্বাস্থ্যটার দিকেও মনে হচ্ছে একটু যত্ন নেয়া দরকার। কিন্তু অলসতা আর উদ্যোগের অভাবে ব্যায়াম করা হয়না। সবকিছু বিবেচনায় মাত্র ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বন্ধুর ১৪ হাজার টাকায় কেনা সাইকেইলটাই কিনে ফেললাম। কিন্তু কেনাত হলো বাট চালাবো কিভাবে ? কারন ঢাকার রাস্তায় রিক্সা, গাড়ি ও মানুষের যে চাপ তাতে ফুটপাতে হাটাই দুস্কর। আর সড়কে বেপরোয়া গাড়ি চলাচলে বুক দুরু দুরু করে। কিন্তু কিইবা করার প্রতিদিনের ভোগান্তি বিরম্বনা থেকে মুক্তি পেতে অনেকটা রিস্ক নিয়েই শুরু ঢাকার রাস্তায় সাইক্লিং। তবে দুচারদিন চলার পর মনের ভয়টা যেন আস্তে আস্তে কমে গেলো। 


কমার আরেকটা বড় কারন হলো চলার স্বাধীনতা। ১১ বছরের ঢাকা জীবনে হঠাতই যেন ব্যাপক স্বাধীনতা পেয়ে গেলাম। অর্থাৎ অফিস ছাড়াও যখন যেখানে খুশি যাওয়ার প্ল্যানিং করা যায়। ১ ঘন্টার রাস্তা ১০ মিনিটেই চলে যাওয়া। সবচে মজার বিষয় হলো তীব্র জ্যামে যখন মোটর সাইকেলগুলোও অসহায় তখনও সচল সাইকেলের চাকা। দিন শেষে অফিসের ক্লান্তি নিয়ে বের হলেও বাসায় যেতে যেতে সাইক্লিং সেই ক্লান্তি দূর করে শরীরে আনে চাঙ্গা ভাব। আর টাকার হিসাবটা নাইবা দিলাম। 

ইদানিং রাস্তায় বের হলে প্রচুর মানুষকে দেখা যায় সাইক্লিং করছে। ছাত্র-পেশাজীবী থেকে শুরু করে সব শ্রেনী পেশার মানুষ সাইক্লিং করছে। তবে ইদানিং বাস চাপা সহ বেপরোয়া এক্সিডেন্টের কারনে সাইক্লিং এ শংকামুক্ত থাকা যাচ্ছেনা। ঢাকার রাস্তাগুলো সাইক্লিংএর উপযোগী নয়। সরকারের একটু নজর থাকলে আরো নিরাপদ হবে আমাদের পথ চলা। 
পাঠক আসুন জেনে নেই, সাইক্লিং এর উপর কিছু গবেষণা ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম কী বলে ?
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা কর্মক্ষেত্রে সাইকেল চালিয়ে যাওয়া-আসা করেন তাদের মোটা হওয়ার সম্ভাবনা ৩৯ শতাংশ। 
বিবিসি জানায়, ৫ বছর ধরে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব গ্লাসগো’র বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, যেসব মানুষ নিয়মিত কর্মক্ষেত্রে সাইকেল চালিয়ে যান তাদের ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি অর্ধেক কমে যায়। প্রায় আড়াই লাখ মানুষের ওপর গবেষণা করে গবেষকরা দেখেন, যারা নিয়মিত সাইকেল চালান তাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৪৫ শতাংশ কমে যায়, আর হৃদরোগের ঝুঁকি কমে  ৪৬ শতাংশ। তাছাড়া, এ অভ্যাসের কারণে মানুষের যেকোনো রোগে আক্রান্ত হয়ে অসময়ে মৃত্যুর ঝুঁকিও কমে ৪১ শতাংশ।

অপরদিকে যারা গাড়িতে যাওয়া-আসা করেন তাদের মোটা হওয়ার সম্ভাবনা ৬১ শতাংশ। বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে নিয়মিত সাইকেল চালানো পেশিশক্তি গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখে এবং ঊরু, কাফ ও নিতম্ব সুগঠিত হয়।


সাইকেল চালালে শরীর প্রচুর ঘামে। এই ঘামের সঙ্গে শরীরের বর্জ্য বের হয়ে ত্বক পরিষ্কার হয়, শরীর ও মন ফুরফুরে থাকে। নিয়মিত সাইকেল চালালে শরীরের বাড়তি ওজন কমে আসে। শরীর সুঠাম থাকে। তাছাড়াও সাইকেল চালানোর কারণে মুক্ত বাতাসে মনে প্রশান্তি আসে। মানসিক দুশ্চিন্তা কমে। অতএব সাইকেল হোক আমাদের প্রিয় পরিবেশবান্ধব বাহন।