বৃহস্পতিবার, ২৬ জুলাই, ২০১৮

স্বামী হিসেবে সাংবাদিকরা সবচেয়ে পঁচা


আমাদের দেশে একটা কথা বেশ প্রচলিত আছে ‘সাংবাদিকের কপালে গরম বউ আর ঠান্ডা ভাত’ অর্থাৎ পেশাগত কারনেই বেশিরভাগ সময় অনেক রাত করে ঘরে ফিরতে হয় সাংবাদিকতার মতো মহান পেশায় নিয়োজিত কর্মীদের। তাই অত রাতে হাড়ির ভাত ঠান্ডা হয়ে গেলেও বউয়ের মেজাজ ঠিকই গরম থাকে। পেশায় যেহেতু মহান সেহেতু ঠান্ডা ভাত খেয়েই গরম মেজাজ হজম করতে হয় রোজ। 

সম্প্রতি অনলাইনে ভেসে বেড়াচ্ছে একটি স্যাটায়ার ধর্মী আর্টিক্যাল তা হলো ‘প্রেমিক হিসেবে নাকি সাংবাদিকরাই সেরা।’ প্র্যাকটিক্যালি ওই লেখার সাথে আমার কোন দ্বিমত নেই। তবে এর পরের স্টেপে যত গণ্ডগোল। 

লেখকের নিজস্ব গবেষণা ও জরিপ বলছে, প্রেমিক হিসেবে সেরা হলেও স্বামী হিসেবে কিন্তু সাংবাদিকরা খুবই পঁচা। সাংবাদিক ও তাদের স্ত্রীদের উপর চালানো এক জরিপে দেখা গেছে ৯০ শতাংশেরই এই পেশার প্রতি রয়েছে চরম অসন্তোষ।

বিশেষ করে পেশাগত অনিশ্চয়তা, অর্থনৈতিক টানাপোরেন, হাউজ পলিটিক্স এবং হয়রানির কারনেই বেশিরভাগ সাংবাদিক পেশার প্রতি বিরক্ত। তবে নানা সংকটেও পেশার প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং দায়বোধ থেকেই এই পেশা ছেড়ে অন্যকোথাও যেতে চাননা ৮০ শতাংশ সাংবাদিক। বাকী ২০ ভাগ মনে করেন পেশা পরিবর্তনের মোক্ষম সুযোগ না থাকা, সরকারি চাকরির বষয় শেষ হওয়ার কারনে এ পেশায় রয়ে গেছেন তারা।

অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১০ কারনে সাংবাদিকদের প্রতি ক্ষুদ্ধ তাদের স্ত্রীরা।  

১. সাংবাদিকদের স্ত্রীদের প্রধাণতম অভিযোগটি হলো সময় না দেয়া। প্রায় ৭০ শতাংশ সাংবাদিকের স্ত্রীরাই মনে করেন তাদের স্বামীরা পর্যাপ্ত সময় দেন না পরিবারে। পেশাগত কাজ নিয়েই দিনের বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকেন তারা। বিশেষত চাকরীজীবি স্ত্রীরা সাংবাদিক স্বামীকে কাছে পান খুবই কম।

২. অর্থনৈতিক টানাপোরেন। সামান্য যে বেতন পান তা দিয়ে সংসারের নিয়মিত খরচ মেটাতেই হিমসিম খেতে হয় সাংবাদিকদের। তাছাড়া অনিয়মিত বেতন এবং পেশাগত অনিশ্চয়তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় থাকেন স্ত্রীরা। 
৩. ছুটির দিনেও কোথাও বেড়াতে যান না।অন্যপেশার লোকজন বিশেষ দিবসগুলোতে ছুটি পেলেও সাংবাদিকরা কোন ছুটি পাননা। এছাড়া সাধারন সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও নানা কারনে ব্যস্ত থাকেন তারা। পারিবারিক অনুষ্ঠান আয়োজনেও সহসা অংশ নিতে পারেননা এই বিশেষ পেশায় নিয়োজিতরা। 

৪. পেশাগত দায়বোধের দোহাই দিয়ে প্রায়ই নানা উটকো ঝামেলায় জড়িয়ে থাকেন সাংবাদিকরা। এ নিয়ে প্রায়ই উদ্বিগ্ন থাকতে হয় স্ত্রীদের ।
৫. পেশাগত কারনে সাংবাদিকরা জীবন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া। তাবৎ দুনিয়ার সমস্ত খবর তাদের ব্রেনের আগায় থাকলেও সংসারের খুটিনাটি ছোট বিষয়গুলোও  তাদের মাথায় থাকেনা। 

৬. বেশিরভাগ সাংবাদিকদের স্ত্রীরাই মনে করেন, স্ত্রীদের প্রয়োজন মাথায় না থাকলেও অন্যের সমস্যা ঠিকই নিজের মাথায় বয়ে বেড়ান সাংবাদিকরা। 
৭. অনেকেরই অভিযোগ, সাংবাদিকরা নাকি একটু বেশিই প্রশ্ন করেন। যেটা সবার পছন্দ নয়। 

৮. কারো কারো অভিযোগ সাংবাদিকদের নাকি আত্নসম্মান বোধ কম। কারন ভালো মন্দ, যে কোন শ্রেনী পেশা বা চরিত্রের লোকদের সাথেই তাদের সমান সম্পর্ক। 
৯. অনেকে মনে করেন, এই পেশার লোকজন জীবন যাপনে যথেষ্ট ডিসিপ্লিন মেনে চলেন না। খাওয়া-দাওয়াসহ প্রাত্যাহিক কাজে চরম অনিয়ম করেন।ফলে শেষ জীবনে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয় পরিবারের অন্য সদস্যদের। 

১০.  অনেকেই মনে করেন, অযাচিত মন্তব্য বেশি করেন সাংবাদিকরা। জীবন জগতের সব কিছু নিয়েই তারা বিশেষজ্ঞ জ্ঞান জাহির করেন। যেই সাবজেক্ট নিজের সেটা নিয়ে যেমন কথা বলেন, তেমনি যে বিষয় আওতার বাইরে সে বিষয়েও পাণ্ডিত্য ফলাতে বেশ পটু সাংবাদিকরা। 

এসব কারনেই অনেক স্ত্রী’রাই মনে করেন প্রেমিক বা বন্ধু হিসেবে সাংবাদিকরা আস্থাভাজন হলেও স্বামী হিসেবে একদম বিপরীত। 

বি.দ্র: এই লেখাটি লেখকের অযাচিত পাণ্ডিত্য। বাস্তব বিষয়ে লেখকের কোন অভিজ্ঞতাই নেই। সবই গবেষণালব্ধ জ্ঞান। তাই লেখা থেকে কারও দু:খিত হওয়ার  বা কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর যুক্তিকতা নেই। 

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন