ছবির মতোই সুন্দর ছিল আমার গ্রামটা...

বর্ষা মৌসুমে নৌকা ছাড়া চলাচলের কোন উপায় থাকতোনা। যেন মহসড়কের পাশে বিচ্ছিন্ন ছোটএকটা দ্বীপ।

সমস্যা যত বড়ই হোক, আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে

আমরা অবশ্যই পারব৷ সমস্যা যত বড়ই হোক না কেন, আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে, নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে অনুপ্রেরণা জোগায়৷ কিন্তু সমস্যাকে নিজের চোখে না দেখলে শুধু আশা দিয়ে সমস্যা সমাধান করা যায় না৷

ঘুরে আসুন নারায়ণগঞ্জের সব দর্শনীয় স্থানে

অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর আমাদের বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি জেলায়ই রয়েছে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। যা আমাদের দেশকে করেছে আরো সমৃদ্ধ। শত বছর ধরে লাখো পর্যটককে করেছে আকৃষ্ট।

মানবসেবাই সর্বোত্তম ধর্ম: ফাদার তেরেসা

অসহায়, দুস্থ মানুষের সহায়তাই তার ধ্যান-জ্ঞান।সহিংসতার বিপরীতে তিনি অসহায়ের ত্রানকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন।তিনি পাকিস্তানের আবদুল সাত্তার ইদি।অসম্ভব মানবসেবার কারনে ৮৪ বছর বয়সী এই ব্যক্তি তার দেশে ফাদার তেরেসা নামেই বেশি পরিচিত।

‘মানসিক প্রশান্তির জন্য সাইকেল’

যাত্রা পথে পরিবহন নিয়ে দুশ্চিন্তা আর ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে বিকল্প হলো একটা বাই সাইকেল। তাছাড়া ইদানিং স্বাস্থ্যটার দিকেও মনে হচ্ছে একটু যত্ন নেয়া দরকার।

বৃহস্পতিবার, ২৬ মার্চ, ২০১৫

কিভাবে দারিদ্রে জর্জরিত সিঙ্গাপুর বিশ্বের শীর্ষ আয়ের দেশ

সিঙ্গাপুর। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোট্ট একটি দ্বীপ। আয়তন মাত্র ৭১৬ বর্গ কিলোমিটার। এটাকে কোন রাষ্ট্র না বলে নগরই বলা চলে। তবুও এই দ্বীপটিই আধুনিক পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র।  অথচ আজ থেকে মাত্র ৫০ বছর পেছনে তাকালে দেখা যাবে ভিন্ন এক দৃশ্য। কী ছিল সিঙ্গাপুর? ১৯৫৯ সালের সেই নগর রাষ্ট্রটিকে অপরাধ ও দরিদ্রে জর্জরিত একটা বাণিজ্যকেন্দ্র বলা যায়।

খুবই ছোট এই নগর রাষ্ট্রের প্রাকৃতিক সম্পদের অপ্রতুলতা উল্লেখ করার মতো। প্রকৃত অর্থে কিছুই ছিল না তাদের। তখন তাদের পেশা-নেশা, বেঁচে থাকা সব কিছুর সঙ্গেই জড়িত ছিল ফিশিং। আর সেটি পরিচিত ছিল মাছ ধরার একটা কেন্দ্র হিসেবেই।

সিঙ্গাপুরের সেই ফিশিংম্যানরাই মাত্র ৫০ বছরে নিজেদেরকে নিয়ে গেছেন আধুনিকতার চরম শিখরে। হয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন, গণতান্ত্রিক ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ মাথপিছু আয়ের দেশে। সেই সাথে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্রের খ্যাতিতো রয়েছেই।

ফিরে দেখা সিঙ্গাপুর: ১৯৬৫ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে সিঙ্গাপুর স্বাধীনতা লাভ করে। লি কুয়ানকে বলা হয়ে থাকে আধুনিক সিঙ্গাপুরের জনক। তার নেতৃত্বেই স্বাধীনতা লাভ করে দেশটি। শুরুর দিকে সিঙ্গাপুরও ছিল তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশ। সে সময়কার সিঙ্গাপুরের চেহারা ছিল আজকের বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। ভাঙ্গাচোরা রাস্তা ঘাট, নিয়ন্ত্রনহীন যানবাহন, রুগ্ন, দরিদ্র মানুষে ভর্তি রাস্তা-ঘাট। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দ্বীপনগরে সংখ্যাগরিষ্ঠ চীনাদের সঙ্গে সংখ্যালঘু মালয় ও ভারতীয়দের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিভেদ ছিল চরমে। অপরাধ আর খুন-খারাবির কোনো বালাই ছিল না। একক সিঙ্গাপুরীয় পরিচয়ের চিন্তাও তখনো ছিল না। দুর্নীতি, অশিক্ষা আর ঘিঞ্জি ছিল চারপাশ। কিন্তু সেদিন পাল্টে গেছে।

একজন লি কুয়ান: মাত্র ৫০ বছরের পথপরিক্রমায় সিঙ্গাপুর পরিণত হয়েছে এশিয়ার সবচেয়ে বাসযোগ্য ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ। আর এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন একজন মানুষ। দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী লি কুয়ান ইউর নেতৃত্বে ব্রিটিশ সামরিক ঘাঁটি থেকে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ মাথপিছু আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে ৫৫ লাখ মানুষের দেশ সিঙ্গাপুর। এ কারণে তাকে বলা হয় আধুনিক সিঙ্গাপুরের জনক।

১৯৬৫ সালে প্রতিবেশি মালয়েশিয়া থেকে আলাদা হওয়ার পর থেকেই মূলত এ দ্বীপ রাষ্ট্রটিকে একটু একটু করে নিজ হাতে প্রতিষ্ঠা করেন লি কুয়ান। ৯ আগস্ট ১৯৬৫, লি কুয়ান ইউ জনগণের পক্ষ থেকে রিপাবলিক অব সিঙ্গাপুরের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্বাধীনতা ঘোষণার সময়েই ঘোষণা করা হয় সিঙ্গাপুর রাষ্ট্রের মূল নীতি হবে— স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার, জনকল্যাণ, সমৃদ্ধি ও সাম্য।’

সদ্য স্বাধীন দেশের ক্ষমতায় গিয়ে লি কুয়ান সবচেয়ে প্রথমে বাছাই করেছেন কিছু মেধাবি মানুষ, প্রনয়ন করেছেন দীর্ঘমেয়াদী কিছু পরিকল্পনা। প্রাথমিক দিকের এই মানুষগুলোর নিরলস পরিশ্রমে দেশটি ধীরে ধীরে তৃতীয় বিশ্বের কাতার হতে পৌছায় প্রথম বিশ্বে। লি কুয়ান মানুষের যে গুনটাকে সবচেয়ে প্রাধান্য দেন তা হচ্ছে ''সততা''। শিক্ষা দীক্ষা , মেধার, ওপরেও স্থান হচ্ছে সততার। সিঙ্গাপুরের প্রতিটা মানুষের মাঝে তিনি এই সততার ভিতটা গভীরভাবে গেথে দিয়েছেন। আসলে দেশের জন্য সকল শিক্ষা ও মেধাই ব্যর্থ যদি মানুষ অসৎ হয়। অপরাধ দমনে সেখানে রয়েছে কঠোর আইন শৃংখলা। নিñিদ্র নিরাপত্তার চাদরে দেশকে ঢেকে রাখতে ২৪ ঘন্টাই সাদা পোষাকে ঘুরে বেড়ায় পুলিশ।

সিঙ্গপুরে সবচেয়ে যে জিনিষটা মুগ্ধ করে তা হচ্ছে নারীদের নিরাপদ অবাধ চলাচল। মধ্যরাতেও একজন নারী ফাকা রাস্তায় পুরোপুরি নিরাপদ। কিছু মজার কিন্তু অত্যন্ত কার্যকর আইনও এখানে সেখানে। কোন নারীর দিকে যদি কোন পুরুষ অশোভন দৃষ্টিতে তাকায়, তবে সেই নারী পুলিশে রিপোর্ট করতে পারে। পুলিশ নিয়ে এমন করকানি দেয় যাতে সেই পুরুষ আর দ্বিতীয়বার কোন নারীর দিকে তাকাতেও ভয় পায়। আরেকেটি মজাদার আইন হচ্ছে লিটারিং বা ময়লা ফেলা বিষয়ক আইন। যেখানে সেখানে থুথু ফেলা, বা ময়লা ফেলা এখানে একটি অপরাধ। কাজেই লিটারিং করলে শাস্তি হচ্ছে একদিন একটি দ্র্ঘী পরিবেশ সচেতনতা বিষয়ক বোরিং সেমিনারে অংশ নিতে হবে ও তারপর পুরো একটি দিন একটি নির্দিষ্ট এলাকার ঝাড়ুদারের দ্বায়িত্ব নিতে হবে।

নাগরিক সুযোগ সুবিধার কথা বলতে গেলে বলতে হবে ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ পানি, উন্নত ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষা ব্যবস্থা যা কিনা স্কুল ও কলেজ লেভেল পর্যন্ত ফ্রি, সাবসিডাইসড উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা, সবার জন্য আবাসন সুব্যবস্থা, উন্নত জব মার্কেট ইত্যাদি।
সিঙ্গাপুরের রাজনীতি: সিঙ্গাপুরের রাজনীতি একটি সংসদীয় প্রজাতন্ত্রের কাঠামোয় সংঘঠিত হয়। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকারের প্রধান। দেশটিতে মূলত একটি রাজনৈতিক দলের প্রভাব বেশি। দেশের নির্বাহী ক্ষমতা সরকারের হাতে ন্যস্ত। আইন প্রণয়নের ক্ষমতা সরকার ও আইনসভার দায়িতে। আইনসভার সদস্যরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রধান হলেও তার ভূমিকা মূলত আলংকারিক। তবে ইদানিং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার পরিসর কিছু বাড়ানো হয়েছে।

১৯৫৯ সালের নির্বাচন থেকে সিঙ্গাপুরের রাজনীতিকে পিপল্স অ্যাকশন পার্টি নামের রাজনৈতিক দল নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে। একাধিক বিরোধী দল উপস্থিত থাকলেও ক্ষমতায় তাদের প্রতিনিধিত্ব নেই বললেই চলে। তাই অনেক বিদেশী পর্যবেক্ষক সিঙ্গাপুরকে কার্যত একটি এক-দলীয় শাসনব্যবস্থা হিসেবে গণ্য করে থাকেন। তবে সিঙ্গাপুরের সরকার সবসময়ই একটি স্বচ্ছ, দুর্নীতিমুক্ত সরকার হিসেবে বহির্বিশ্বে পরিচিত। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতে সিঙ্গাপুর বহুদিন ধরেই এশিয়ার সবচেয়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশ।

(তথ্য কৃতজ্ঞতা: নাগরিক ব্লগ, উইকিপিডিয়া ও সংবাদ পত্র)- আকতারের ক্যানভাস

বুধবার, ২৫ মার্চ, ২০১৫

সৌদি আরবে জনশক্তি রপ্তানির সমস্যা ও সম্ভাবনা

দীর্ঘ ৬ বছর পর সৌদি আরবে জনশক্তি রপ্তানির সুযোগ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য বড় সুখবর। কিন্তু বর্তমান সৌদি আরবে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা জনশক্তি রপ্তানির এই সুযোগ পুরুষের পরিবর্তে নারী শ্রমিকদের জন্য! তাও আবার পেশার দিক দিয়ে মান মর্যাদাহীন গৃহকর্মী (খাদ্দামা)। সৌদি আরবের গৃহকর্মীদের খাদ্দামা বলেই ডাকা হয়!

বেসরকারি হিসেবে সৌদি আরবে বর্তমান ২৬ লাখ ১৫ হাজারের অধিক বাংলাদেশি শ্রমিক সৌদি আরবে কর্মরত রয়েছে। বর্তমান বিশ্বে সৌদি আরবই বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার। ৬ বছর একটানা ভিসা বন্ধ না থাকলে বর্তমান সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা অর্ধকোটি ছাড়িয়ে যেত। 


 ২০০৭ সালে সৌদি তৎকালিন বাদশা সালমান-বিন-আবদুল আজিজের প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা প্রহরীকে খুন ও ডাকাতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় একাধিক বাংলাদেশিকে। ২০০৬-২০০৭ সালের নানা অপরাধ পর্যালোচনা করে। সৌদি আরবে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্ষদ (শরিয়াহ বোর্ড) এর সিদ্ধান্ত ক্রমে বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধ করা হয়। এবং ওই ঘটনায় দীর্ঘ বিচার কার্যক্রম পর্যালোচনা শেষে অভিযুক্তদের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১১ সালে ৮ বাংলাদেশিকে শিরচ্ছেদ করা হয়।

 একই বছর বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে হত্যা ডাকাতিসহ আরও অনেক অভিযোগ এনে বাংলাদেশি ভিসা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাংলাদেশি ভিসা বন্ধ করার ক্ষেত্রে ইন্ডিয়ান ও পাকিস্তানি মালিকানাধীন মধ্যপ্রাচ্য ও সৌদি আরব থেকে স্থানীয়ভাবে প্রকাশিত দৈনিকগুলো ব্যাপক ভূমিকা রাখে। মূলত এই সব দৈনিকে অপপ্রচারের কারণেই বাংলাদেশি ভিসা বন্ধ হয়ে যায়।

 মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি মালিকানাধীন গণমাধ্যমের অনুপস্থিতি ও সৌদি আরবের প্রভাবশালী দৈনিক গুলোতে ইন্ডিয়ানদের ব্যাপক প্রভাব বিস্তারের কারণে সৌদিদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বাংলাদেশিদের সুনাম ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হতে থাকে। এক পর্যায়ে বাংলাদেশি ফ্যামিলি ভিসা থেকে শুরু করে সব ধরনের ভিসা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। 

এছাড়া সৌদি আরবে যে পাঁচ লাখের অধিক রোহিঙ্গা রয়েছে। বাংলা ভাষাভাষি হওয়ায় মায়ানমারের রোহিঙ্গারাও বাংলাদেশি পরিচয় দিয়ে থাকেন। সৌদি আরবে নানা অপরাধের সাথে এসব রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ততা আছে বলে বিভিন্ন সংস্থা দাবি করেছে। চেহারা ও ভাষার মিল থাকায় অপরাধ সংঘটনের পরপরই দোষ চাপিয়ে দেয়া হয় বাংলাদেশিদের উপর। এই কারণেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা নানা সমালোচনার সম্মুখীন হয়ে থাকেন।

দীর্ঘ ছয় বছরের আমার সৌদি প্রবাস জীবনের নানা অর্জন ও অভিজ্ঞতার নিরিখে আমি সৌদি আরবে নারী শ্রমিক প্রেরণের ক্ষেত্রে সম্ভাবনার চেয়ে সমস্যায় বেশি দেখছি। মূলত দুটি কারণে সৌদি আরবে নারী শ্রমিক প্রেরণ হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সালে সৌদি আরবে নারী শ্রমিক প্রেরণের চুক্তি অনুসারে প্রতি মাসে ১০ হাজার হলে ১২ মাসে ১ লাখ ২০ হাজার নারী শ্রমিক সৌদি আরবে গেলে বাংলাদেশের গার্মেন্টস্ সেক্টরের কি হবে? তা ভেবে না দেখে বাংলাদেশির উল্লাস দেখে পাগলের বিলাপ বলেই মনে হয়েছে আমার। দুঃখ  ও পরিতাপের বিষয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী, বিশ দলীয় জোট নেত্রী, স্পীকারসহ দেশের শীর্ষ স্থানীয় পদে যে দেশের নারীদের অগ্রায়ন হয়েছে সেদেশের নারীরা বিদেশে গৃহকর্মী হয়ে গেলে দেশ কিভাবে মাথা তুলে দাঁড়াবে?

ব্যাপক ডাক ঢোল পিটিয়ে ১৪ সালের শেষ পর্যায়ে আরব আমিরাতে ও বাংলাদেশি গৃহকর্মী প্রেরণের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। গত ৪ মাসে আরব আমিরাতে কত নারী শ্রমিক গিয়েছে তার হদিছ নেই। এছাড়া  হংকংসহ আরও অনেক দেশে বাংলাদেশ থেকে গৃহকর্মী নেওয়ার চুক্তি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ যেন গৃহকর্মী উৎপাদনের দেশে পরিণত হয়েছে। যে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কথা হচ্ছে.. সেদেশের নারীদের বিদেশে গৃহকর্মী হওয়া কতটা মানসম্মানের তা চুক্তিকর্তারাই ভালো জানেন! 

এছাড়া সৌদি আরবে যেসব নারী শ্রমিক যেতে আগ্রহী হবেন তাদের বয়স ও শারীরিক অবস্থা এবং পরিচ্ছন্নতা সৌদি আরবের গৃহকর্তা নয় স্বয়ং গৃহকর্তীদেরও পছন্দ হবে কি না সন্দেহ রয়েছে! 

কারণ সেদেশে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশের ইংরেজী জানা শিক্ষিত গৃহকর্মীদের দারুণ দারুণ সব সার্ভিস দিয়েছে! সেদেশে বাংলাদেশের মত অজোপাড়া গায়ের অশিক্ষিত মেয়েরা ভিন দেশের ভিন্ন পরিবেশে কতটা মানিয়ে নিতে পারবেন? 
এছাড়া বাংলাদেশের এসব মেয়েরা খাদ্য সংকটেও পড়বে। কেননা সৌদি পরিবারগুলোতে বাংলাদেশের মত ভাত ও তরিতরকারি রান্না হয় না। সেদেশগুলোতে রান্না ঘরের কাজ না থাকলেও যার যত বিত্ত তার তত খাদ্দামা (গৃহকর্মী) রাখার সংস্কৃতি রয়েছে। সব গৃহকর্মীদের অত্যাচারই যেমন সত্য নয়, তেমনি সব গৃহকর্তাও সাধু নয়।

কথা হচ্ছে মাসের পর মাস খেটে বেতন না পেয়ে গৃহকর্মীরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? সৌদি আরবে আমার প্রবাস জীবনের দীর্ঘ ৪ বছর অবস্থান ছিল জেদ্দার কিলো তামানিনস্থ  বাংলাদেশ দূতাবাসের সন্নিকটে। 

আমার দীর্ঘ ৪ বছরের অভিজ্ঞতায় আমি কোনো ভূক্তভোগী বাংলাদেশিকে দূতাবাসের সেবা পেতে দেখিনি! দিনের পর দিন বাংলাদেশ দূতাবাস অফিসে এসে সমস্যার কথা বড় কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেনি অসহায় বাংলাদেশি শ্রমিকরা। 

 যাদের রক্ত ও ঘামের বিনিময়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা তরান্বিত হচ্ছে সেই প্রবাসী বাংলাদেশিদের অভিভাবক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ দূতাবাস! সংকট সমাধানে কতটা অসহায় তা কেবল ভূক্তভোগীরাই জানেন। দূতাবাসের কর্মকর্তারা দামী গাড়ি নিয়ে বড় বাড়িতে সরকারি অর্থ খরচ করে বিলাসী জীবন যাপনই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রবাসী শ্রমিকদের কোনো মূল্যায়ন-ই হয় না দূতাবাসে। রাজনৈতিক বিবেচনায় দূতাবাসের নিয়োগ বদলি বিবেচিত হওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা কর্মকর্তারা রাখতে পারেন না কিংবা রাখেন না! 

সৌদি আরবে বন্ধ ভিসা চালু হওয়ার খবরে ২৬ লাখ সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশিরা খুশিতে আত্মহারা হয়ে উঠে। সংবাদকর্মী হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা গত এক মাসে কয়েক'শ বার ফোন করে জানতে চেয়েছেন আমার কাছে আসলেই কি ভিসা বের হচ্ছে? নাকি নারী শ্রমিক প্রেরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।

 সৌদি ভিসা চালু হবার খবরে ২৬ লাখ প্রবাসী ২ কোটিরও বেশি আত্মীয়-স্বজনের মুখে হাসি ফুটে। ফলে খবর প্রকাশের এক দিনের মধ্যে গত ২ ফেব্রুয়ারি জেলায় জেলায় জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ে পুরুষদের দীর্ঘ লাইন পরিলক্ষিত হয়। সরকারিভাবে নিবন্ধনের কথা বলায় নারী শ্রমিকের ভিসার জায়গায় পুরুষ শ্রমিকের এই দীর্ঘ লাইন পরিলক্ষিত হচ্ছে। 

বিদেশ যেতে নিবন্ধনের জন্য এই দীর্ঘ লাইন বলে দেয় বাংলাদেশের মানুষ অকর্মা নয়। দেশ কর্মসংস্থান দিতে ব্যর্থ হওয়ায় নাগরিক জীবন অস্থির হয়ে উঠেছে। সম্ভবত বাংলাদেশই এশিয়া মহাদেশের মধ্যে শিক্ষিত বেকারের সর্বোচ্চ দেশে পরিণত হয়েছে।

 জীবনের স্বাদ আহ্লাদ পূরণ করতে না পেরে অনেক তরুণ বিপথগামী হচ্ছে। জড়িয়ে পড়ছেন অসামাজিক ও অবৈধ কর্মকা-ে। একজন কর্মবীর মানুষের দৈনিক খরচের পরিমাণের চেয়ে একজন বেকারের খরচ অনেক বেশি। বাবার হোটেলের তিন বেলা খাবার ফ্রি হলেও মোবাইল বিল, ইন্টারনেট খরচ শ্বাস-নিঃশ্বাসের মত প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে এই বিশাল বেকার জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে হবে তাহলেই বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে।

নাজিম উদ্দিন চৌধুরী এ্যানেল
লেখক, সংগঠক ও কলামিস্ট
nazimabnews24@gmail.com

রবিবার, ১৫ মার্চ, ২০১৫

ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের বড় অর্জন: প্রাথমিকে বৃত্তি পেলো ৫৪,৪৮১ জন

২০১৪ সালের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় ৫৪ হাজার ৪৮১ শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান রবিবার দুপুরে বৃত্তির ফল ঘোষণা করেন। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এ বৃত্তির ফল ঘোষণা করা হয়।


বৃত্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ট্যালেন্টপুলে (মেধাবৃত্তি) ২১ হাজার ৯৮৩ জন এবং সাধারণ কোটায় ৩১ হাজার ৪০৭ জন রয়েছে। সম্পূরক বৃত্তি পেয়েছে এক হাজার ৯১ জন।

সারাদেশে সর্বোচ্চ বৃত্তিপ্রাপ্ত ১০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয় থেকে ১৪৫ জন বৃত্তি পেয়েছে।

প্রাথমিক বৃত্তির ফলাফল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের ওয়েবসাইট   (www.dpe.gov.bd)  থেকে সংগ্রহ করা যাবে।

সোমবার, ২ মার্চ, ২০১৫

বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে সৌদি গমনেচ্ছু নারীকর্মীদের নিবন্ধন

আগামী ৫ মার্চ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে সৌদি আরব তথা বিদেশ গমনেচ্ছু নারীকর্মীদের নিবন্ধন কার্যক্রম।

প্রথম পর্যায়ে ১১ মার্চ পর্যন্ত শুধু ঢাকা বিভাগের বাসিন্দারা নিবন্ধন করতে পারবেন। এরপর ১২  থেকে ১৬ মার্চ রাজশাহী ও রংপুর, ১৭ থেকে ২৩ মার্চ চট্টগ্রাম ও সিলেট এবং ২৪ থেকে ২৮ মার্চ খুলনা ও বরিশাল বিভাগে নিবন্ধন হবে।

পুরুষকর্মী এ দফায় নিবন্ধন করতে পারবেন না।

সোমবার রাজধানীর ইস্কাটনের প্রবাসীকল্যাণ ভবনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান প্রবাসী জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক বেগম শামসুন নাহার।

তিনি জানান, দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশনের নগর তথ্যসেবা কেন্দ্রে এবং জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ে নিবন্ধন করা যাবে। প্রতি কর্মদিবসে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নিবন্ধন চলবে। নিবন্ধনের জন্য ৩০০ টাকা খরচ হবে। এর মধ্যে সরকারি ফি ২০০ টাকা। ফরম পূরণে সহায়তার জন্য উদ্যোক্তাকে দিতে হবে ১০০ টাকা।
 
গত ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় সৌদি আরব। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল দেশটি। পরে ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সঙ্গে জনশক্তি রফতানিতে চুক্তি করে সৌদি সরকার। ওই দিন বিনা খরচে সৌদি আরব যাওয়ার ঘোষণায় নিবন্ধন করতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। ভিড় সামলাতে না পেরে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধন বন্ধ করে দেওয়া হয়।

প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, 'নারী-পুরুষ কর্মী একত্রে নিবন্ধন করায় কিছু সমস্যা হচ্ছে। এ কারণেই নারীদের জন্য আলাদা নিবন্ধন চালু করা হয়েছে। বিশেষ করে যারা গৃহকর্মী হিসেবে যেতে চান তাদের আলাদা নিবন্ধন করা হবে। নিবন্ধিতদের মধ্যে যারা চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হবে তাদের ছয় সপ্তাহ গৃহস্থালি কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।'

এদিকে, সৌদি গেজেট সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আগামী ৩ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে গৃহকর্মী সৌদি আরবে পৌঁছতে পারে বলে আশা করছে দেশটি।
দেশটির ইস্টার্ন প্রভিন্সের রিক্রুটমেন্ট অফিসের একাধিক সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সৌদি আরবে কাজের ভিসা দেওয়া শুরু হবে। - আকতারের ক্যানভাস