ছবির মতোই সুন্দর ছিল আমার গ্রামটা...

বর্ষা মৌসুমে নৌকা ছাড়া চলাচলের কোন উপায় থাকতোনা। যেন মহসড়কের পাশে বিচ্ছিন্ন ছোটএকটা দ্বীপ।

সমস্যা যত বড়ই হোক, আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে

আমরা অবশ্যই পারব৷ সমস্যা যত বড়ই হোক না কেন, আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে, নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে অনুপ্রেরণা জোগায়৷ কিন্তু সমস্যাকে নিজের চোখে না দেখলে শুধু আশা দিয়ে সমস্যা সমাধান করা যায় না৷

ঘুরে আসুন নারায়ণগঞ্জের সব দর্শনীয় স্থানে

অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর আমাদের বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি জেলায়ই রয়েছে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। যা আমাদের দেশকে করেছে আরো সমৃদ্ধ। শত বছর ধরে লাখো পর্যটককে করেছে আকৃষ্ট।

মানবসেবাই সর্বোত্তম ধর্ম: ফাদার তেরেসা

অসহায়, দুস্থ মানুষের সহায়তাই তার ধ্যান-জ্ঞান।সহিংসতার বিপরীতে তিনি অসহায়ের ত্রানকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন।তিনি পাকিস্তানের আবদুল সাত্তার ইদি।অসম্ভব মানবসেবার কারনে ৮৪ বছর বয়সী এই ব্যক্তি তার দেশে ফাদার তেরেসা নামেই বেশি পরিচিত।

‘মানসিক প্রশান্তির জন্য সাইকেল’

যাত্রা পথে পরিবহন নিয়ে দুশ্চিন্তা আর ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে বিকল্প হলো একটা বাই সাইকেল। তাছাড়া ইদানিং স্বাস্থ্যটার দিকেও মনে হচ্ছে একটু যত্ন নেয়া দরকার।

রবিবার, ৩০ মার্চ, ২০১৪

ঘুরে আসুন নারায়ণগঞ্জের সব দর্শনীয় স্থানে

আকতার হোসেন:  অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর আমাদের বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি জেলায়ই রয়েছে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। যা আমাদের দেশকে করেছে আরো সমৃদ্ধ। শত বছর ধরে লাখো পর্যটককে করেছে আকৃষ্ট। বিশ্বের বুকে দেশের সম্মান বৃদ্ধি করছে। প্রকৃতির টানে প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক ভীড় জমান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে লীলা ভ’মি আমাদের এই বাংলাদেশে। তাছাড়া বছরে অন্তত একটা সময় হলেও আমরা নিজেকে একটু রিফ্রেস করতে ছুটে যাই প্রকৃতির কোলে। অনেক সময় কাজের ব্যাস্ততার কারণে ইচ্ছা থাকা সত্বেও যেতে পারিনা কোথাও।

পাঠক আজকে এমনই কিছু স্থানের তথ্য জানাবো যেখানে আপনি ইচ্ছা করলে শহুরে ব্যস্ততার ফাঁকেও অনায়াসেই ঘুড়ে আসতে পারবেন সেই সব দর্শনীয় স্থান থেকে। তাহলে আজকে চলুন ঘুরেআসি রাজধানীর একেবারে কোলঘেষা জেলা নারায়ণগঞ্জের কিছু দর্শনীয় স্থান থেকে।


প্রাচীন বাংলার রাজধানী পানাম নগরী: মোঘল আমলে বাংলাদেশের রাজধানী ছিল আজকের এই সোনারগাঁও। ৪০০ বছর আগের সেই জৌলস না থাকলেও সেই সোনালীদিনের ঐতিহ্য বুকে ধারণ করে আজও  ঠায় দাঁড়িয়ে আছে পানাম নগরী। সেখানে মোঘল রাজা ঈসা খাঁ’র আমলে নির্মিত কিছু প্রাসাদ আর পুরাকীর্তি এখনো আপনাকে মনে করিয়ে দিবে কতশত বছর আগেও কত সমৃদ্ধ ছিল আমাদের এই দেশ। অযতœ আর অবহেলার কারণে এর ঐতিহ্য হারাতে বসলেও বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে এখন কিছু প্রাচীন ভবন সংরক্ষন করা হচ্ছে। এলাকাটিকে সরকার পর্যটন নগরীতে পরিণত করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। ঢাকা থেকে মাত্র ২৫ কি.মি. দূরত্বের এ এলাকটিতে ঘুরাফেরা করতে কোন টাকা লাগবেনা।

সোনারগাঁ জাদুঘর ও সংলগ্ন পার্ক: পানাম নগরীর পাশেই গড়ে সোনারগাঁয়ের ঐতিহ্যবাহী লোক ও কারুশিল্প যাদুঘর। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের স্বপ্নে গড়া এই লোক ও কারুশিল্প যাদুঘরে আপনি ইচ্ছা করলে হারিয়ে যেতে পারবেন শত সহস্র বছরের বাঙ্গালী ঐতিহ্যের মাঝে। পুরনো দিনের গ্রামীন ঐতিহ্য থেকে শুরু করে আগেকার আমলের রাজাদের ব্যবহৃত সব আসবাব পত্র ও যুদ্ধাস্ত্র দেখতে পারবেন সেখানে। এতে প্রবেশ ফি ১৫ টাকা।

বাংলার তাজমহল : প্রেমের জন্য অমর হয়ে আছেন সম্্রাট শাহজাহান তারা বিবির জন্য তাজমহল নির্মান করে। বিশ্বের ক’জনই আছেন সেখানে যাওয়ার অভিলাস প্রকাশ করেনা?  কিন্তু যেতেই পারেন বা ক’জন?  ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য সুখবর হলো আমাদের দেশেই নির্মিত হয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় তাজমহল। ঠিক সম্রাট শাহজাহানের গড়া আসল তাজমহল না হলেও আগ্রার তাজমহলের আদলেই গড়ে তোলা হয়েছে এই তাজমহলটি।
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ের পেরাবো এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা আহসান উল্লাহ মণি গড়ে তুলেছেন বাংলার তাজমহল। এই তাজমহল দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে সোনারগাঁওয়ের পেরাবো গ্রামে। সেখানে প্রবেশ ফি ৫০ টাকা।

রূপগঞ্জ রাজবাড়ি: ঢাকা সিলেট মহাসড়কের মধ্যেখানেই রূপগঞ্জ। সেখানে আছে প্রায় শতবর্ষী রাজবাড়ি। অপূর্ব এই রাজবাড়ীর কারুকার্যমন্ডিত সৌন্দর্য দৃষ্টিনন্দন। জমিদার বাড়ির সামনেই রয়েছে বিশাল আকৃতির পুকুর। প্রাচীন এ প্রাসাদটি বেশ আকর্ষণীয়। প্রায় ৯৫টি কক্ষ সংবলিত এ প্রাসাদে অতিথিশালা, নাচঘর, পূজাম-প, কাছারিঘর, আস্তাবলসহ আরো বিভিন্ন অংশে বিস্তৃত। একটু সময় করে ঘুরে আসতে পারেন প্রাকৃতিক পরিবেশে সংরক্ষিত রূপগঞ্জের রাজবাড়ী থেকে। এখানে প্রবেশের জন্য কোন ফি লাগবেনা।

শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রম: সারা বিশ্বের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রাণপুরুষ শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রম ও তীর্থস্থান এই জেলায়ই। জেলার বারদী ইউনিয়নে লোকনাথের আশ্রম। প্রতিবছর হাজার হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী এখাে আসেন পূন্য¯œানের জন্য। ঢাকা থেকে প্রায় ৩৫ কি.মি. দূরে এই তীর্থস্থানে ভ্রমনের জন্য যাতায়াত ভাড়া ছাড়া আপনাকে কোন খরচ করতে হবেনা। এছাড়াও এই এলাকা অর্থাৎ বারদীতে রয়েছে বাংলার বড় বাবু জ্যোতি বসুর স্মৃতি বিজরিত পৈত্রিক নিবাস।
শ্রী শ্রী বহ্মচারীর আশ্রম, বারদী
এছাড়াও সোনারগাঁওয়েই রয়েছে মোঘল সম্্রাট গিয়াস উদ্দিন আযম শাহ্ এর মাজার।
পাঁচ পীরের মাজার, লালপুরি শাহ্ এর দরবার শরিফ প্রমুখ ঐতিহ্যবাহী স্থান।

হাজীগঞ্জ দূর্গ:  নারায়ণগঞ্জ জেলাশহরের কিল্লারপুলে অবস্থিত ঐতিহাসিক হাজীগঞ্জ দুর্গ। বাংলার বারভূঁইয়াদের অন্যতম ঈসা খাঁর কেল্লা হিসেবেও অনেকের কাছে এটি পরিচিত। নদীপথে মগ ও পর্তুগিজদের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য মীরজুমলার শাসনামলে এ দুর্গ নির্মিত বলে ঐতিহাসিকগণ মনে করেন। চতুর্ভুজাকৃতি এই দুর্গের প্রাচীরে রয়েছে বন্দুক বসিয়ে গুলি চালাবার ফোকর।

সোনাকান্দা দুর্গ: শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব তীরে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দরে অবস্থিত এ জলদুর্গটি। হাজীগঞ্জ দুর্গের প্রায় বিপরীত দিকেই এর অবস্থান। নদীপথে ঢাকার সঙ্গে সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ নদীপথগুলোর নিরাপত্তার জন্য মুঘল শাসকগণ কতগুলো জলদুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সোনাকান্দা দুর্গ।

বিবি মরিয়ম মসজিদ ও সমাধি: নারায়ণগঞ্জ শহরের হাজীগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত এ মসজিদটি হাজীগঞ্জ মসজিদ নামেও পরিচিতি। তিন গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটি শায়েস্তা খাঁ কর্তৃক ১৬৬৪-১৬৮৮ সালে নির্মিত বলে ঐতিহাসিকগণ মনে করেন।

কদমরসুল দরগা: নারায়ণগঞ্জ শহরের বিপরীত দিকে শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পাড়ে নবীগঞ্জে অবস্থিত কদমরসুল দরগা। এখানে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স)-এর কদম মোবারকের ছাপ সংবলিত একটি পাথর রয়েছে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, সম্রাট অকবরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণাকারী আফগান নেতা মাসুম খান কাবুলি পদচিহ্ন সংবলিত এ পাথরটি একজন আরব বণিকের কাছ থেকে কিনেছিলেন। ঢাকার জমিদার গোলাম নবী ১৭৭৭-১৭৭৮ সালে এ সৌধটি নির্মাণ করেন।  আর কদম রসুল দরগার প্রধান ফটকটি গোলাম নবীর ছেলে গোলাম মুহাম্মদ ১৮০৫-১৮০৬ সালে নির্মাণ করেন।

রূপগঞ্জ জামদানি পল্লি: প্রাচীন আমলে বাংলার মসলীনের কদর  ছিল বিশ্ব জুড়ে। তবে আজ সেই ঐতিহ্যবাহী মসলীন না থাকলেও রয়েছে জামদানী। বিশ্বের অন্যতম আকর্ষনীয় এ শাড়ী তৈরীতে শীতলক্ষার তীরে রূপগঞ্জ থানার রূপসীতে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় জামদানী পল্লি। রূপসী বাজার ও এর আশপাশে শতশত জামদানি শিল্পী দিন-রাত তাঁতে বুনেন নানা রকম শৈল্পিক জামদানি। তুলনামূলক কম দামে এখান থেকে ভালো মানের জামদনি শাড়ি কেনা যায়। 

রাসেল পার্ক : মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ির পাশেই বেসরকারি একটি বনভোজন কেন্দ্র রাসেল পার্ক। নানারকম গাছ-গাছালি ছাড়াও এখানে আছে ছোট একটি চিড়িয়াখানা। সপ্তাহের প্রতিদিনই সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে এটি।

জিন্দাপার্ক: বর্তমানে রাজউকের বর্ধিত সম্প্রসারিত এলাকা পূর্বাচল উপশহরে অবস্থিত এই পার্কটি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ও পরিবেশে তৈরী এই পার্কটি আগামীর ঢাকার বৃহৎ বিনোদন কেন্দ্র। গাছগাছিতে মুখরিত এই জায়গাটিতে ইচ্ছে করলেই ঘুরে আসতে পারেন।

নারায়ণগঞ্জের পরিভ্রমনকারি নদী সমূহ হচ্ছে শীতলক্ষ্যা, মেঘনা, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, বুড়িগঙ্গা, বালু এবং ধলেশ্বরী নদী। এসব নদীতে নৌকায় করে ঘুরে বেড়িয়ে আন্দন্দের সময় পার করতে পারেন।


যেভাবে যাবেন  

সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে অথবা গুলিস্তান থেকে নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র যাতায়াতের জন্য লোকাল ও স্পেশাল বাস আছে। ভাড়াও হাতের নাগালে মাত্র ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৪০ টাকা পর্যন্ত।


পাঠক আপনার কর্মব্যস্তদিনের শেষে অথবা একদিন সময় করে বন্ধু-বান্ধব বা স্বপরিবারে ঘুরে আসতে পারেন নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন মনোরম পরিবেশ থেকে।

৫ম ধাপের উপজেলা নির্বাচন: বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার আশংকা বিএনপি’র

ঢাকা, ৩০ মার্চ : গত ৪ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের মতো আগামীকালের নির্বাচনেও সরকারদলীয় ক্যাডারদের ভোটকেন্দ্র দখল, অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সরকার গত নির্বাচনগুলোর চেয়ে আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

রবিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নির্যাতনের কথা তুলে ধরে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামীকালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে সরকার দলীয় সমর্থকরা। র‌্যাব-পুলিশকে ব্যবহার করে গ্রেফতার ও নির্যাতন চালাচ্ছে। কারচুপি ও শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্র দখল করে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অধিকাংশ পদ ছিনিয়ে নিতে বিরোধী নেতা-কর্মীদের হত্যা ও জখম করেছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী দিয়ে নির্বিচারে গ্রেফতার করে দেশের কারাগারগুলো কানায় কানায় ভর্তি করে ফেলা হয়েছে।

নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকারের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, স্বৈরাচারী কায়দায় জোরজবরদস্তি শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে পৃথিবীর কোনো স্বৈরশাসক টিকে থাকেনি। আপনারাও থাকবেন না, এটাই ইতিহাসের অমোঘ বিধান।

তিনি বলেন, এখনও সময় আছে, অবৈধ জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে পদত্যাগ করুন। নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থার অধীনে অবিলম্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায়, তীব্র গণঅভ্যূত্থানে আপনাদের পতন অনিবার্য।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকার গত ৫ই জানুয়ারী প্রহসনের নির্বাচনের আগে ও পরে দেশব্যাপী যেসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়েছে তা বর্তমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে আরো বেশী বেপরোয়াভাবে প্রকাশিত হয়ে উঠেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে-বর্তমান অবৈধ সরকার গত চারটি ধাপের উপজেলা নির্বাচনে যেভাবে সহিংসতা চালিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল থেকে শুরু করে ব্যালট বাঙ ও ব্যালট পেপার ছিনতায়ের মাধ্যমে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদগুলো ছিনিয়ে নিতে মরিয়া ছিল; আগামীকালের নির্বাচনেও তার ব্যতয় ঘটাবে বলে মনে হচ্ছে না।

সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যই আওয়ামী লীগের অনুষঙ্গ উল্লেখ করে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের শাসনামলগুলোতে গণতন্ত্রের সুস্থ ধারাকে বেগবান রাখতে কখনোই সচেষ্ট হয়নি। গণতন্ত্রের লেবাসে আওয়ামী লীগ সবসময়ই গণতন্ত্রকে  গলাটিপে হত্যা করেছে। এরা নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীসহ রাষ্ট্রের সকল অঙ্গকে নিজেদের ইচ্ছামতো ব্যবহার করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা অর্থাৎ বাকশালী শাসন প্রতিষ্ঠার সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে বড় বড় বুলি আউড়িয়ে প্রকারন্তরে বর্তমান অবৈধ সরকার গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবিরাম কুঠারাঘাত করছে। আর এজন্যই দেশের আপামর জনসাধারণের আবেগ-অনুভূতির প্রতি তোয়াক্কা না করে নিজেদের ক্ষমতার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বাস্তবায়ন করতে দেশব্যাপী রক্তারক্তি, হত্যা, সন্ত্রাস ও ভোট ডাকাতির দল হিসেবে আওয়ামী লীগ আবারো নিজেদের মুখোশ নগ্নভাবে উন্মোচন করেছে।

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, সংবিধানে নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার প্রভাবমুক্ত হয়ে নির্বাচন পরিচালনা করার যথেষ্ট ক্ষমতাবান হওয়া সত্ত্বেও ভোট ডাকাতি ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিজেদেরকে সরকারের অতীব আজ্ঞাবহ হিসেবে প্রমাণ করে প্রতিষ্ঠানটিকে কলঙ্কিত করেছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন উপজেলা নির্বাচনের প্রত্যেকটি ধাপে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনে ব্যর্থ  হয়েছে বললে ভুল হবে, বরং নির্বাচন কমিশন নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্ব করেছে। অদক্ষ, অযোগ্য, ব্যর্থ, দলবাজ নির্বাচন কমিশনের পূর্ণাঙ্গ পদত্যাগ আমরা আগেও চেয়েছি, এখনও চাই।

নির্বাচনে সরকার দলীয় লোকদের সহিংসতার কথা উল্লেখ করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রথম দফা উপজেলা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে তারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালালেও বিএনপি তথা ১৯ দলীয় জোটের সাফল্য দেখে তারা দিশেহারা হয়ে উপজেলা নির্বাচনের পরবর্তী ধাপগুলোতে আরো বেসামাল ও বেপরোয়া হয়ে উঠে। চতুর্থ দফা উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি ও ১৯ দলীয় জোটের ৪ জন নেতা-কর্মীর মৃত্যুই তাদের ধারাবাহিক ভয়াল ও পৈশাচিক তান্ডবের সাক্ষী বহন করে। সুতরাং এ কথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় নির্বাচনী কারচুপি ও সহিংসতায় পারদর্শী আওয়ামী লীগ ১৯৭৩ সাল থেকে যে দক্ষতার প্রমান দিয়েছে তা বিশ্বের ইতিহাসে নজীরবিহীন।

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস হচ্ছে প্রতারণা, হিংসা, সন্ত্রাস, হত্যা, গুপ্ত হত্যা, দুর্নীতি ও মিথ্যাচারের ইতিহাস। ভোট ডাকাতি, কেন্দ্র দখল, ফলাফল ছিনতাই ইত্যাদি আওয়ামী লীগের অপরাজনীতির বর্ণাঢ্য ঐতিহ্য। গণতন্ত্রের মুখোশে আওয়ামী লীগ একটি সর্বনাশা স্বৈরাচারের নাম। আওয়ামী লীগ এবং গণতন্ত্র পরস্পর বিপরীত শব্দ।

শনিবার, ১ মার্চ, ২০১৪

উপজেলা নির্বাচন শেষ হলেই আন্দোলন : খালেদা জিয়া

১৯ দলীয় জোট নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, উপজেলা নির্বাচন শেষ হলে দ্রুত আন্দোলন শুরু হবে। ওই আন্দোলনে সরকারের পতন হবে। এজন্য আপনাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

শনিবার বিকালে রাজবাড়ীর ঐতিহাসিক  রেলওয়ে ময়দানে ১৯দলীয় জোট আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ জবরদস্তির মাধ্যমে নির্বাচন করেছে। এটা কোনো নির্বাচন হয়নি। জনগণ ওই নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে যায়নি। কারণ, জনগণ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়।

তিনি বলেন, এ সরকার অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় এসেছে। এটা অবৈধ জবর দখলকারী সরকার। এদেরকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। আর এর জন্য আন্দোলনের বিকল্প নেই।

আওয়ামী লীগ মানুষের ভালো চায় না উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আওয়ামী লীগের হাতে রক্ত আর রক্ত। এরা রক্ত পিপাসু দল। এদের হাতে ৫৭জন সেনা অফিসারসহ ৭৪জন বিডিআরের রক্ত লেগে আছে। শাপলা চত্ত্বরে এতিম ও আলেমদের খুনের রক্ত এদের হাতে লেগে রয়েছে। এরা মানুষের ভাল করতে জানেনা। জানে শুধু মানুষ খুন করতে।

দেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে সরাতে হবে উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, দেশকে স্বাধীন- সার্বভৌম রাখতে হবে।  আমরা দেশের মানুষের জন্য স্বাধীনতা এনেছি।

খালেদা জিয়া বলেন, এরা ব্যাংকের টাকা, হলমার্ক, শেয়ার মার্কেটের টাকা লুট করছে। এটা লুট-পাটের সরকার। প্রতিনিয়ত দেশের টাকা লুট করছে। এরা কুইক রেন্টালের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে। এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।

তিনি বলেন, সরকার আরেক দফা গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এতে সব কিছুর দাম বেড়ে যাবে জনগণের গলা কেটে এই টাকা নেয়া হবে। এজন্য আপনাদের প্রতিবাদ করতে হবে।

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা দেশে একদলীয় বাকশালী শাসন কায়েম করতে চায়। এর আগেও তারা রক্ষী বাহিনী গঠন করে দেশের মানুষের উপর নির্যাতন চালিয়েছিল, হাজার হাজার বিরোধী নেতাকর্মীদের হত্যা করেছিল। এটা তাদের পুরনো চরিত্র।  এখনও দেশে প্রতিনিয়ত মানুষ খুন-গুম হচ্ছে। বিদেশীরা এদেশের মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

রাজবাড়ীর উন্নয়ন প্রসঙ্গে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ গত পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু রাজবাড়ীর কোন উন্নয়ন করেনি। পদ্মাসেতুর নামে লুটপাট চালিয়েছে। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে পদ্মা সেতু করা হবে। এছাড়াও রাজবাড়িতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে।

কৃষি উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার কৃষকদের দিকে খেয়ালই করে না। আপনারা দেখেছেন রাস্তায় আলু ফেলে চাষীরা কিভাবে প্রতিবাদ করেছে। অথচ এই সরকার তাদের দিকে নজর দেয়ার সময় পায় না। তারা নিজেদেরকে নিয়ে ব্যস্ত।  আমরা ক্ষমতায় গেলে কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে সব ধরনের সহযোগিতা করবো। কৃষি উৎপাদন ব্যয় কমানো হবে। কৃষিতে ভর্তুকি দেয়া হবে।

ছাত্র ও যুবকদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, তোমাদেরকে জাগতে হবে। রক্ত দিয়ে আমরা এই দেশ স্বাধীন করেছি। সেই স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। ক্যাম্পাসে লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ নাই। সেখানে নকলের রাজত্ব চলছে। আর ছাত্রলীগ প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মানুষ মারছে। তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় গেলে তরুণ ও যুবকদের জন্য কর্মসংস্থ্যানের ব্যবস্থা করব। যাতে তাদের ছাত্রলীগ যুবলীগের মতো সন্ত্রাস ও খুনোখুনি করতে না হয়।

দেশে মানুষের জান মালের কোন নিরাপত্তা নেই উল্লেখ করে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, পুরো দেশেটাকে কারাগার বানানো হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা করা হচ্ছে। দেশে চলছে গ্রেফতারের বাণিজ্য। দেশে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। মানুষ নির্ভয়ে চলতে পারছে না। ঘর থেকে ধরে নিয়ে গুম করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আজকে আমাদের মা বোনরা পর্যন্ত নিরাপদে নেই। আমরা দেখেছি কিভাবে যৌথ বাহিনী তা-ব চালিয়েছে। মানুষকে নির্যাতন করে ঘরবাড়ি লুট করেছে। আমাদের কাছে সব নির্যাতনের তালিকা আছে। সময় মতো তা প্রকাশ করা হবে। তারা যদি জনগণের সরকার হতো তাহলে এভাবে নির্যাতন চালাতে পারতো না।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন  বলেন, সংসদে কেবল গালিগালাজ হচ্ছে। তথাকথিত সংসদে কোন বিরোধী দল নেই। এখানে শুধু বসে বসে জনগণের টাকা নষ্ট করা হচ্ছে। অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনদাবি মেনে নিতে হবে। জনপ্রিয়তা থাকলে তা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে প্রমাণ করুন।

সরকারের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন উপজেলা নির্বাচনে কিভাবে সরকারি বাহিনী তা-ব চালিয়েছে। কিভাবে তারা ভোট কারচুপি করেছে। তবুও বিএনপি প্রার্থীরাই এগিয়ে আছে। আর নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে যে এদের কী হতো তা আল্লাহই ভালো জানেন।

বেগম খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের চরিত্র বড়ই খারাপ। জনগণ নির্বাচন পত্যাখ্যান করেছে। বিশ্বও এ নির্বাচন গ্রহণ করেনি। ঠিক তখনি তারা সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। এসময় ঝিনাইদহের নির্যাতিত কৃষ্ণ গোপালের কথা তুলে ধরেন তিনি।

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের কোন জায়গা নেই উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, এদেশে জঙ্গির স্থান নেই। কোন জেএমবি, আল-কায়েদার স্থান এ দেশে হবে না। দেশে জঙ্গিরা কিভাবে পালায় তার জবাব স্ব-ঘোষিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই দিতে হবে। অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই সরকার এসব করে যাচ্ছে।

সমাবেশে বাধা দেয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার মানুষকে এ সমাবেশে আসতে বাধা দিয়েছে। সমাবেশে আসতে পথে আটকে দিয়েছে। দেরিতে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। এর মাধ্যমে সরকার দেখাতে চেয়েছিলো বিএনপির সমাবেশে মানুষের সমাগম কম। কিন্তু আপনারা সে বাধা উপেক্ষা করে তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছেন।

দলগুছিয়ে সরকার পতনে আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, শীঘ্রই দল গুছিয়ে আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে। আপনাদেরকে এ জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এবাররের আন্দোলনে এই অবৈধ সরকারকে বিদায় নিতে হবে। আমাদের আন্দোলন সফল হবে ইনশাআল্লাহ।

(জাস্ট নিউজ/ এ এইচ/এমকেএম/১৭০০ঘ.)