রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৪

নিজেকে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ন: মালালা

নিজেকে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ন। সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আপনি কে তা জাহির করতে হবে। নিজের জীবন নিয়ে এমনই দর্শনে বিশ্বাসী ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ নোবেল বিজয়ী পাকিস্তানী কন্যা মালালা ইউসুফ যাই। সম্প্রতি তিনি ডেইলি মেইলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন  ব্যক্তি জীবন নিয়ে নিজের দর্শনের কথা বিশ্বাসের কথা। জানিয়েছেন তার ভবিষ্যত লক্ষ উদ্দেশ্য নিয়েও। তরুন পাঠকদের জন্য তার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।

তরুণরা নিজেদের পথ নিজেরাই ঠিক করে নিচ্ছে এবং নিজেরাই নিজের সিদ্ধান্ত গ্রহন করছে, এটি কতটুকু গুরুত্ত্বপূর্ন বলে মনে করছেন আপনি?

মালালা: এটা আমার জন্য খুবই গুরুত্ত্বপূর্ন। তাছাড়া আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব আছে যাদের কোনো নিজস্ব পরিচয় নেই। তারা কারও স্ত্রী, কারও কন্যা বা কারও বোন। এমনকি তারা তাদের নিজেদের নামে পরিচিত হন না। তারা তাদের দক্ষতাকে কাজে লাগাতে পারেন না বা সমাজের কোনো কাজে লাগতে পারেন না। তারা জন্ম গ্রহন করেন, মাকে সাহায্য করেন, ভাই বাবাকে দেখাশুনা করেন এরপর তারা বিয়ে করেন। তারা আসলে জানে না যে তারা কে?

নিজেকে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ন। সিদ্ধান্ত নিতে, আপনি কে তা জাহির করতে হবে। আমি কে এবং আমার নিজের অধিকারকে চিনিয়ে দেওয়া- এ সব আমার বাবা আমাকে দিয়েছেন বা আমার বাবা নিজেকে উপলব্ধি করতে বাধা দেন নি। তিনি কখনো আমাকে স্কুলে যেতে নিষেধ করেন নি, কখনো বিয়ে করার কথা বলেন নি। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ন।

নিজের সম্পর্কে আপনি কী মনে করেন?
মালালা: স্পষ্টভাষী।

আপনার জীবনের গল্প পড়ে মনে হয়েছে যে আপনি কি চান তা আপনি জানেন এবং সেটাই খুঁজে যাচ্ছেন। আপনি কি মনে করেন যে আপনার ব্যক্তিত্যের এই দিকটি আগেই ছিল বা বিশেষ কারও মাধ্যমে অনুপ্রানিত হয়েছিলেন বা আপনি নিজেই অর্জন করেছেন?

মালালা: যখন আমি ছোট ছিলাম,তখন আমি মানুষের কথা শুনতাম এবং বুঝতে চেষ্টা করতাম তারা কি বলছে ও কোথা থেকে এসেছে। আমি শুনতাম কিন্তু কিছু বলতে পারতাম না। কিন্তু আমার বাবা আমাকে উৎসাহ দিতেন এবং বলতেন যাই আমার মনে আসে তা বলে ফেলা ঠিক। এভাবে তিনি আমাদের স্বাধীনভাবে গড়ে তুলেছেন।

আমরা যদি আমাদের পরিচয় নতুন ভাবে সংজ্ঞায়িত করতে পারি তাহলে আপনি কোন পরিচয়ে পরিচিত হতে চান?

মালালা: আমি নিজেকে একজন সমাজকর্মী ভাবি। মেয়েদের অধিকারের জন্য, প্রত্যেক শিশুর জন্য শিক্ষা, নারীর অধিকার, সমতা এবং ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করে যাব।

আপনি সারা বিশ্বে হাজার হাজার নারীর অনুপ্রেরনা। আপনার বেড়ে ওঠার সময়ে কোন নারী আপনাকে অনুপ্রেরনা দিত?
মালালা: বেনজির ভুট্টো ছিলেন একজন অনুপ্রেরনাদায়ী নেত্রী ও নারী। একজন রাজনৈতিক হিসেবে তার কিছু বৈশিষ্ট্য মানুষ পছন্দ করতো না কিন্তু তিনি সারা বিশ্বের মানুষকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, নারীও একজন নেত্রী, একজন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষমতা আছে। তিনি আমাকে আশা দেখিয়েছেন যাতে আমিও আমার ভবিষ্যতে এমন কাজ করতে পারি।

আমাদের দেশে আরোও নারী আছেন, যারা অনেক কাজ করছেন এবং তারা সমাজকর্মী। যখন আমি বেড়ে উঠছিলাম তখন তারাও আমাকে অনুপ্রেরনা জুগিয়েছেন।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন